নজরুলজয়ন্তী উপলক্ষে সোমবার রাজ্য সরকারের তথ্যসংস্কৃতি দফতরের তরফে রবীন্দ্র সদনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বৃষ্টিমুখর বিকেলে সেই অনুষ্ঠানে হঠাৎ হাজির মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পর মন্ত্রী তথা গায়ক ইন্দ্রনীল সেনের অনুরোধে গানও গাইলেন। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বৈত সঙ্গীত পরিবেশন করছিলেন ইন্দ্রনীলও। গায়ক-মন্ত্রীর সুরের ভুলও ধরিয়ে দিলেন মমতা।
মমতার কথাতেই ইন্দ্রনীল শুরু করেন, ‘‘নয়ন ভরা জল গো তোমার/ আঁচল ভরা ফুল’। ইন্দ্রনীল গানের দ্বিতীয় লাইনে পৌঁছতেই মমতা বলেন, ‘‘হয়নি... তুমি ভুল সুরে গাইছ।’’ প্রথম থেকে গানটি শুরু করেন তিনি। তবে মুখ্যমন্ত্রী আগেই বলে রেখেছিলেন, তাঁর গানে যেন কোনও ভুল না-ধরা হয়। কারণ তাঁর নিয়মিত চর্চা নেই।
মমতা বলেন, ‘‘আমার চর্চাই নেই। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ফাইল দেখতে দেখতে আর বকবক করতে করতেই সময় চলে যায়!’’ গান শুরুর আগে মুখ্যমন্ত্রী এ-ও বলেন, ‘‘আমার কাছে কিন্তু কোনও কাগজ নেই। তাই কথার ভুল হলে কেউ ধরবেন না।’’
প্রতি বছর রাজ্য সরকারের উদ্যোগে নজরুলজয়ন্তীর অনুষ্ঠান হয় নজরুল তীর্থ প্রেক্ষাগৃহে। ইন্দ্রনীল জানিয়েছেন, এ বার মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই অনুষ্ঠান হচ্ছে রবীন্দ্র সদনে। মুখ্যমন্ত্রীর গান লেখা, সুর করা বা গাওয়া কোনওটাই নতুন নয়। তাঁর লেখা এবং সুর করা গান নিয়ে কয়েক মাস আগে কসবা রাজডাঙায় সঙ্গীত উৎসবও হয়েছিল। সোমবার ফের এক বার গাইলেন তিনি।
মমতা যে সোমবার রবীন্দ্র সদনে হঠাৎই পৌঁছেছেন, তা স্পষ্ট হয়ে যায় ইন্দ্রনীলের কথাতেই। তিনি বলেন, ‘‘আমরাও জানতাম না দিদি এখানে আসবেন।’’ নবান্ন থেকে কালীঘাটের বাড়িতে ফেরার সময়ে মমতা পৌঁছে যান রবীন্দ্র সদনে নজরুলজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে। মুখ্যমন্ত্রী যখন মঞ্চে ওঠেন তখন সেখানে ছিলেন গায়ক রূপঙ্কর বাগচী, রাঘব চট্টোপাধ্যায়, মনোময় ভট্টাচার্যেরা। ছিলেন নৃত্যশিল্পী ডোনা গঙ্গোপাধ্যায়ও। প্রথিতযশা শিল্পীদের সামনে মমতা প্রথমে গান গাইতে নিমরাজি ছিলেন। পরে ইন্দ্রনীলের অনুরোধেই গাইতে হয় তাঁকে।