• সুইসাইড নোট যাচাইয়ে দেরি কেন, প্রশ্নে পুলিশ
    আনন্দবাজার | ২৭ মে ২০২৫
  • সে ‘চিপস’ চুরি করেনি। মাকে বলার পাশাপাশি, ‘সুইসাইড নোট’-এও এ কথাই লিখেছিল স্কুলছাত্র কৃষ্ণেন্দু দাস। তবে পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ার এই কিশোরের অস্বাভাবিক মৃত্যুর চার দিন পরেও পুলিশ নিশ্চিত হতে পারেনি যে ওই ‘সুইসাইড নোট’-এর হাতের লেখা কৃষ্ণেন্দুরই কি না। চিরকুটটির হাতের লেখা যাচাইয়ের কাজ পুলিশের তরফে শুরুই করা হয়নি বলে অভিযোগ। তবে এ ব্যাপারে পুলিশ আধিকারিকদের বক্তব্য মেলেনি। ঘটনায় এখনও কেউ গ্রেফতারও হয়নি।

    সিভিক কর্মী শুভঙ্কর দীক্ষিতের দোকান থেকে কৃষ্ণেন্দুর চিপসের প্যাকেট চুরি করেছে, এই অভিযোগ ওঠে গত ১৮ মে। পরে তাকে মারধর, কান ধরে ওঠবস করানো হয় বলে দাবি। তার মা-ও তাকে চড় মারেন। অপমানে সে দিনই আগাছানাশক পান করে কৃষ্ণেন্দু আত্মহত্যার চেষ্টা করে বলে দাবি। ২২ মে তার মৃত্যু হয়। ঘটনায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে ২৫ মে, রবিবার। কৃষ্ণেন্দুর মৃত্যুর পরেই পুলিশ অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে। ওই ‘সুইসাইড নোট’-এর কথাও তখনই পরিবারের তরফে জানানো হয়েছিল। সংবাদমাধ্যম ও সমাজমাধ্যমে সেই চিরকুটের ছবি ছড়ায়। কিন্তু এত দিনেও পুলিশ সেই চিরকুট হেফাজতে নিয়ে হাতের লেখা পরীক্ষা করায়নি বলে অভিযোগ।

    এসডিপিও (তমলুক) আফজল আবরারকে একাধিক বার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। উত্তর দেননি মোবাইল-বার্তার। পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার সৌম্যদীপ ভট্টাচার্যকেও ফোনে পাওয়া যায়নি। তবে তদন্তকারীদের দাবি, রবিবার কৃষ্ণেন্দুর মা সুমিত্রা দাস ছেলের মৃত্যুতে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ দায়েরের পরে, ওই ‘সুইসাইড নোট’ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশের পাল্টা দাবি, কৃষ্ণেন্দুর হাতের লেখা মেলানোর কাজে তার পরিবার সহযোগিতা করছে না। কৃষ্ণেন্দুর স্কুলের খাতা চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু বাড়ির লোকেরা তা দিতে চাননি। গরমের ছুটি শেষে কৃষ্ণেন্দুর স্কুল, বাকুলদা হাই স্কুল থেকে সপ্তম শ্রেণির এই ছাত্রের খাতা সংগ্রহের পরিকল্পনা করছে পুলিশ।

    কৃষ্ণেন্দুর মা সুমিত্রার পাল্টা দাবি, “সোমবারই কৃষ্ণেন্দুর একটি খাতা পুলিশকে দিয়েছি। তাও পুলিশ কেন এমন বলছে জানি না!” সিভিক কর্মী শুভঙ্কর দীক্ষিত-সহ মোট চার জনের বিরুদ্ধে সুমিত্রা রবিবার অভিযোগ করেছেন। তবে সোমবার রাত পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি। সুমিত্রার আক্ষেপ, “কেন ও ভাবে মারতে গেলাম! ছেলেটা আমার অনেক কষ্ট পেয়ে চলে গেল।”
  • Link to this news (আনন্দবাজার)