এই সময়: আকাশের মুখ সকাল থেকেই গোমড়া। বেলা একটু বাড়তেই শুরু হয়েছিল বৃষ্টি। কখনও জোরে, কখনও আস্তে। মেঘলা আকাশ জানান দিচ্ছিল, এত সহজে এই বৃষ্টি থেকে মুক্তি মিলবে না দক্ষিণবঙ্গের।
সপ্তাহের প্রথম কাজের দিনেই আলিপুর হাওয়া অফিস জানিয়ে দিল এই সপ্তাহের শেষ দিকেই উত্তরবঙ্গে ঢুকে পড়বে বর্ষার বাতাস। আজ, মঙ্গলবারই বঙ্গোপসাগরে একটি নিম্নচাপ তৈরি হতে চলেছে। প্রাক-বর্ষা ও নিম্নচাপের মিলিত প্রভাবে গোটা সপ্তাহজুড়েই বৃষ্টি চলবে কলকাতা-সহ বাংলার সব প্রান্তে।
শুক্রবার অর্থাৎ ৩০ মে পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর এবং বাঁকুড়া ও হুগলিতে ৭ থেকে ২০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির লাল সতর্কতাও জারি করা হয়েছে। উত্তরবঙ্গেও ২৯ থেকে ৩১ মে পর্যন্ত অতিভারী বৃষ্টির লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
নির্ধারিত ১ জুনের পরিবর্তে এই বছর দেশে বর্ষা ঢুকেছে ২৪ মে। কেরালা ও তামিলনাড়ুর পুরোটা এবং কর্নাটকের বেশির ভাগ অঞ্চল জলীয় বাষ্পে পরিপূর্ণ দক্ষিণ–পশ্চিম মৌসুমি বাতাসের দখলে চলে গিয়েছে।
কেরালার বর্ষা প্রবেশের পরেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, বাংলায় বর্ষা ঢুকতে কত দেরি? সোমবার তারই জবাব দিল হাওয়া অফিস। জানিয়ে দেওয়া হলো, মে–র শেষ সপ্তাহেই উত্তরবঙ্গে বর্ষা নেমে যাওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি। দক্ষিণে কবে বর্ষা নামবে, সেটা বোঝা যাবে তার পরই।
সোমবার সকালেই মৌসম ভবন জানিয়েছে, দক্ষিণ ভারতের মধ্যে কেরালা ও তামিলনাড়ুর পুরোটা আগেই মৌসুমি বায়ুর দখলে চলে গিয়েছিল। এ বার মহারাষ্ট্র ও রয়ালসীমার কিছুটা এবং কর্নাটকের প্রায় পুরোটাই বর্ষার মেঘ ছেয়ে ফেলেছে।
দক্ষিণ–পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে উত্তর–পূর্ব ভারতেও। দেশের এই অংশের সাতটি রাজ্যের প্রতিটিতেই বর্ষা নেমে গিয়েছে। এ বার পালা পশ্চিমবঙ্গের।
রাজ্যে বর্ষার বাতাস প্রবেশের আগেই ‘বর্ষাকালের মতো’ বৃষ্টি শুরু হওয়াকে আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ রবীন্দ্র গোয়েঙ্কা ‘প্রাক-বর্ষার বৃষ্টি’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, ‘এই সপ্তাহের পুরোটাই এমন আবহাওয়া থাকবে। একদিকে প্রাক-বর্ষার বৃষ্টি এবং অন্য দিকে বঙ্গোপসাগরে আজ মঙ্গলবারই যে নিম্নচাপ তৈরি হতে চলেছে, তার প্রভাবে আগামিকাল বুধবার থেকে দক্ষিণবঙ্গের বেশির ভাগ জেলাতেই মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা খুব বেশি।’
এর মধ্যে ২৭ থেকে ২৯ মে পর্যন্ত কলকাতা, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, হাওড়া, হুগলি ও বাঁকুড়ার মতো দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলোয় দমকা হাওয়া ও বৃষ্টির হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং, কালিম্পং, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার এবং উত্তর দিনাজপুরেও বিভিন্ন জায়গায় ৭ থেকে ২০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত অতিভারী বৃষ্টির সতর্কবার্তা রয়েছে।