• সুকান্তর সঙ্গে পোস্টারে ছবি! কার্তুজ-সহ ধৃত কেতুগ্রামের যুবকের বিজেপি যোগ স্পষ্ট
    প্রতিদিন | ২৬ মে ২০২৫
  • ধীমান রায়, কাটোয়া: ধর্মতলায় বিপুল পরিমাণ কার্তুজ-সহ এসটিএফের হাতে কলকাতায় ধরা পড়া কেতুগ্রামের যুবকের সঙ্গে বিজেপি যোগ! রবিবার তার গ্রেপ্তারির পর সোমবার রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে চাপানউতোর শুরু হল কেতুগ্রামে। শাসকদলের অভিযোগ, এই অস্ত্র সরবরাহের সঙ্গে বিজেপির কোনও বড় নেতা জড়িত। যদিও বিজেপি নেতৃত্ব এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। কিন্তু বাস্তব প্রমাণ তা বলছে না। বিজেপির একাধিক পোস্টারে সুকান্ত মজুমদারের সঙ্গে তাঁর ছবি দেখা গিয়েছে। ধর্মতলা বাসস্ট্যান্ড থেকে সে গ্রেপ্তার হওয়ার পর স্ত্রী, বন্ধুরা জানাচ্ছেন, কাজ আছে বলে বেরিয়েছিলেন তিনি। তারপর এই খবরে হতাশ তাঁরা।

    রবিবার কেতুগ্রাম থেকে বাসে কলকাতায় আসামাত্রই ওই যুবককে গ্রেপ্তার করে এসটিএফ। জানা যায়, ধৃতের নাম রামকৃষ্ণ মাজি। তাঁর কাছ থেকে ১২০ রাউন্ড কার্তুজ ও নগদ টাকা উদ্ধার হয়। এসটিএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, জেরায় বারবার তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করেছে রামকৃষ্ণ। অন্যদিকে, শাসকদল তৃণমূলের অভিযোগ, রামকৃষ্ণ বিজেপির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত। দলের পদেও ছিলেন। কার্তুজ উদ্ধার বা অস্ত্রপাচারের ঘটনার সঙ্গে বিজেপির আরও বড় কোনও নেতা জড়িত থাকতে পারে। যদিও বিজেপির সাংগঠনিক বোলপুর জেলা সভাপতি শ্যামাপ্রসাদ মণ্ডল তৃণমূল অভিযোগ নস্যাৎ করে বলেন, “বিজেপির সঙ্গে ওই যুবকের কোনও সম্পর্ক নেই। আমি যেটুকু জানি, রামকৃষ্ণ মাজি গাড়ি ভাড়া খাটায়। আমাদের দল প্রয়োজনে তাঁর কাছে গাড়ি ভাড়া নেয়। নিজেই চালায়। গাড়ি ভাড়া দেওয়ার সময় যদি কখনও পরিচিত নেতাদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে কথাবার্তা বলে, সেটা দোষের কিছু হতে পারে না।”

    কেতুগ্রাম ১ ব্লকের প্রত্যন্ত গ্রাম কুলুন। এই গ্রামের বাসিন্দা রামকৃষ্ণ মাজি। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে রামকৃষ্ণ মাজি তাঁর কাকা ঈশান মাজির কাছে সপরিবারে থাকেন। বাবা বাপি মাজি রংমিস্ত্রির কাজ করেন। মা-বাবা থাকেন বেলুড়ে। কুলুন গ্রামে মাঠের ধারে রামকৃষ্ণদের বাড়ি। রামকৃষ্ণ বিবাহিত। স্ত্রী ও আড়াই বছরের মেয়ে রয়েছে। পারিবারিক একটি বলেরো গাড়ি রয়েছে। ওই গাড়ি চালাতেন রামকৃষ্ণ। কাকা ঈশান মাঝির দাবি, গাড়িটি তাঁরই, ভাইপো তা চালাতেন। কেউ কেউ বলছেন, ওই গাড়িটি রামকৃষ্ণ ঋণ করে কিনেছেন। মাসে ১৯ হাজার টাকা কিস্তি দেন কিনি।

    ঈশান মাজি জানাচ্ছেন, “রামকৃষ্ণ আমাকে বলে গাড়ির একটা টায়ার পালটাতে হবে। তাই টায়ার কিনতে কলকাতা যাবে বলে রবিবার সকালে বেরিয়ে যায়।” স্ত্রীর দাবি, “রবিবার সকালে বর্ধমানে কাজ আছে বলে আমার স্বামী বেরিয়ে যান। তারপর রাতে কেতুগ্রাম থানা থেকে আমাদের জানানো হয়, আমার স্বামীকে কলকাতায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে।” জানা গিয়েছে, ২০২১ সালে কেতুগ্রাম বিধানসভার বিজেপির সাংগঠনিক ৪৬ নম্বর মণ্ডলের তপসিলি মোর্চার সভাপতির পদে ছিলেন রামকৃষ্ণ মাজি। সামাজিক মাধ্যমে রামকৃষ্ণর বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের ছবি-সহ নিজের পদ উল্লেখ করে ছবিও পোস্ট করেছিলেন। পাণ্ডুগ্রাম অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি লক্ষণ মণ্ডল বলেন, “রামকৃষ্ণ মাজি দীর্ঘদিন ধরেই সক্রিয় বিজেপি কর্মী। এলাকায় সন্ত্রাস করারও অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে। এছাড়া আরও বদনাম রয়েছে। আমরা চাই এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হোক।”
  • Link to this news (প্রতিদিন)