অয়ন ঘোষাল: আন্তর্জাতিক আবহাওয়া মডেল এবং আবহাওয়া বিজ্ঞানীদের থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, আরব সাগরের সিস্টেম ইতিমধ্যেই গভীর নিম্নচাপ হিসেবে স্থলভাগে প্রবেশ করেছে। পর্যাপ্ত পরিমাণ জলীয় বাষ্প নিয়েই এই সিস্টেম এখনও আরও প্রায় ২ দিন পশ্চিমের একাধিক রাজ্যে প্রবল বর্ষণ ঘটাবে।
এই সিস্টেম থেকে যতবেশি পরিমান জলীয় বাষ্প বঙ্গোপসাগরের দিকে আসার কথা ছিল, ততটা আসেনি। ফলে বঙ্গোপসাগরে মঙ্গলবার তৈরি হতে চলা নিম্নচাপকে শেষ পর্যন্ত নির্ভর করতে হচ্ছে বঙ্গোপসাগরে এই মুহূর্তে উপস্থিত জলীয় বাষ্পের ওপর। পাশাপাশি সেখানে এই মুহূর্তে অত্যন্ত সক্রিয় মৌসুমী বায়ু।
শেষ মুহূর্তে মৌসুমী বায়ুর থেকে জলীয় বাষ্প পর্যাপ্ত পরিমাণ টেনে নিয়েও সিস্টেমটি আদৌ ঘূর্ণিঝড় হতে পারবে কিনা তা নিয়ে সন্দিহান বিশ্বের বিভিন্ন আন্তর্জাতিক আবহাওয়া মডেল এবং আবহাওয়া বিশ্লেষকরা। তারা মনে করছেন শেষ পর্যন্ত এই সিস্টেম গভীর নিম্নচাপ বা লঘুচাপ হিসেবে স্থলভাগে প্রবেশ করবে। তবে মঙ্গলে অমাবস্যা। সমুদ্র পৃষ্ঠের প্রেসার বা চাপ লঘু হবে। সেই ফ্যাক্টর কাজে লাগিয়ে সূচনার দিন অর্থাৎ মঙ্গলবারই নিজের শক্তি বৃদ্ধি করতে পারে নিম্নচাপ।
কী কী হতে পারে?
১) মঙ্গলবার ২৭ মে নিম্নচাপ তৈরির পর অমাবস্যার লো প্রেসারকে কাজে লাগিয়ে এটি শক্তি সঞ্চয় করবে। ২৮, ২৯ মে শক্তি বৃদ্ধি করবে। ফরমেশন সম্পূর্ণ হলে প্রাথমিকভাবে এটি উত্তর - উত্তর পশ্চিম অর্থাৎ ওড়িশার ভদ্রকের দিকে এগোবে। এরপর গতিপথ একাধিকবার পরিবর্তন করে এটি শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের মংলা এবং ক্ষেপুপাড়ার দিকে যাবে। সেখানেই ভূমিভাগে প্রবেশ করবে। এটি পশ্চিমবঙ্গের সাগরদ্বীপ, কাকদ্বীপ, ডায়মন্ড হারবারকে সমান্তরালভাবে অতিক্রম করতে পারে।
২) দক্ষিণবঙ্গের উপকূলীয় এলাকায় বিশেষত দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুরে ২৮ থেকে ৩০ মের মধ্যে উত্তাল সমুদ্র এবং জলোচ্ছ্বাস।
৩) দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, কলকাতা, হাওড়া, উত্তর ২৪ পরগনা, হুগলি এবং ঝাড়গ্রাম জেলায় মাঝারি থেকে ভারী এবং কখনও অতিভারী বৃষ্টি।
৪) দক্ষিণবঙ্গের উপকূল এলাকায় ৫০ থেকে ৭০ এবং কোনও কোনও সময় ৯০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হওয়া। দক্ষিণবঙ্গের তালিকাভুক্ত বাকি জেলায় ৩৫ থেকে ৫৫ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হওয়া।
৫) মৌসুমী বায়ু এবং ট্রপিক্যাল সিস্টেমের জোড়া ফলায় উইন্ড শেয়ারে তারতম্যের জন্য আঞ্চলিক ভাবে মিনি টর্নেডোর মতো ঝাপটা বা ওয়াটার স্পাউট।
৬) উপকূল লাগোয়া নিচু এলাকায় জলমগ্ন পরিস্থিতি। নদী প্লাবন। কাঁচা দুর্বল বাঁধের ক্ষতি।
৭) হাইলাইট অঞ্চল সাগর দ্বীপ, নামখানাজ কাকদ্বীপ, পাথর প্রতিমা, কুলতলি, গোসাবা, বাসন্তী, ক্যানিং, মথুরাপুর, মন্দিরবাজার, মগরাহাট, ডায়মন্ড হারবার, ফলতা।