মুক্তি পেয়েছে কঠিন সময়ে! তার পরেও ‘আমার বস’ সগৌরবে ২ লক্ষ দর্শক দেখেছে: শিবপ্রসাদ
আনন্দবাজার | ২৬ মে ২০২৫
সমালোচনা যে হচ্ছে না, তা নয় কিন্তু। চিত্রনাট্যের ত্রুটি, সংলাপের ধার, অভিনেতাদের পর্দায় উপস্থিতি নিয়ে নানা মুনির নানা মত। নন্দিতা রায়-শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের গরমের ছুটির ছবি ‘আমার বস’-এর ধার কি তাতে একটুও কমেছে? ছবিমুক্তির দু’সপ্তাহ পরে হল মালিক, পরিবেশকদের দাবি, ২ লক্ষেরও বেশি দর্শক ছবিটি দেখেছেন।
দর্শক কেন ভিড় করে উইন্ডোজ প্রযোজনা সংস্থার ছবি দেখতে প্রেক্ষাগৃহে যাচ্ছেন?
এক, ১৪ বছর পরে বাংলা ছবিতে রাখি গুলজার। দুই, শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়-শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়ের টাটকা জুটি। তিন, সময়ের থেকে এগিয়ে থাকা বিষয়। আইটি অফিসে মা-বাবাদের দেখভালের জন্য বিশেষ বিভাগ চালু। আর?
জানতে আনন্দবাজার ডট কম যোগাযোগ করেছিল নবীনা প্রেক্ষাগৃহের কর্ণধার নবীন চৌখানির সঙ্গে। তিনি উচ্ছ্বসিত। বললেন, “নন্দিতাদি-শিবুর ছবির আলাদা দর্শক আছেন। তাঁরা ওঁদের ছবি দেখতে ভালবাসেন। ওঁদের প্রযোজনা সংস্থার কোনও ছবি মুক্তি পেলেই ওঁরা হল ভরিয়ে দেখতে আসেন। এ বারেও এসেছেন।” নবীন জানিয়েছেন, এমন দর্শকও আছেন, যাঁরা একাধিক বার ছবিটি দেখেছেন। তার পরেও তাঁরা বাড়ির লোকেদের সঙ্গে করে নিয়ে দেখতে আসছেন! নবীনায় তাই ‘আমার বস’ প্রথম দিন থেকে হাত খুলে খেলছে। “শুধুই সপ্তাহান্তে নয়, অফিসের দিনেও দর্শকের ভিড় খুব কম নয়”, দাবি হল মালিকের। দু’সপ্তাহ মিলিয়ে তাই ব্যবসার অঙ্ক ৬ লক্ষের ঘর ছুঁই ছুঁই।
এটা দক্ষিণ কলকাতার গল্প। উত্তর কলকাতার প্রেক্ষাগৃহের ছবিও কি একই রকম?
“অনেকটাই মেলে”, বলেছেন প্রাচী প্রেক্ষাগৃহের কর্ণধার বিদিশা বসু। তাঁর কথায়, “প্রথম সপ্তাহ একটু নরম ছিল। কারণ, ‘অপারেশন সিঁদুর’। দুই দেশের উত্তপ্ত পরিস্থিতি। সপ্তাহ ঘুরতেই নন্দিতাদি-শিবু স্বমহিমায়। সপ্তাহান্তে তো বটেই, কেজো দিনেও কিন্তু দর্শক এসেছেন। হলে ৯০ শতাংশ আসন ভরে গিয়েছে।”
নন্দিতা-শিবপ্রসাদের কিন্তু বিশ্রাম নেই। তাঁরা সারা শহর ছুটে বেড়াচ্ছেন। হলে হলে পৌঁছে গিয়ে দর্শকদের থেকে মতামত জানছেন।
তাঁদের চোখে দর্শক উন্মাদনার নেপথ্য রহস্য কী? শিবপ্রসাদ বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। তাঁর মতে, “বিষয়টি এতটাও সহজ ছিল না। যখন মুক্তি পায় তখন গরমের ছুটি পড়েনি। তার উপরে কঠিন সময়। একটু ভয়ে ছিলাম। ধীরে ধীরে দেখলাম, দর্শক নিচ্ছে ছবিটা। দেখছে ‘আমার বস’। নন হলিডে রিলিজেও যখন দর্শক ভিড় করেন সেটাই আমাদের কাছে বড় প্রাপ্তি, টলিউডের ক্ষেত্রেও।”
সময়ের থেকে এগিয়ে গল্প বলেছেন। একুশ শতকেও কেউ ভাবতে পারেন না, অফিসে মা-বাবাদের দেখভালের বন্দোবস্ত থাকবে..., “সেটা কমবেশি আমাদের অনেক ছবিই। যেমন, ‘মুক্তধারা’। সংশোধনাগারের বন্দিরাও যে সেখান থেকে বেরিয়ে নিয়মনিষ্ঠ জীবন যাপন করতে পারেন সেটা আমাদের ছবি প্রথম দেখিয়েছে।” পরিচালক ‘কণ্ঠ’ ছবিরও উল্লেখ করেছেন। যেখানে ‘ল্যারিংজ়েকটমি ক্লাব’-এর কথা বলা হয়েছে। সেই ক্লাব এ দেশে এখনও তৈরি না হলেও বিদেশে হয়েছে। শনিবার নবীনা প্রেক্ষাগৃহে গিয়েছিলেন পরিচালক। জনৈক দর্শকদের দাবি, এই ছবি সমস্ত ভাষায় তৈরি করে ছড়িয়ে দেওয়া উচিত। ১২ বছর পরে এটাই দেশের ভবিষ্যৎ।