বিবাহবিচ্ছিন্না মায়ের নাবালক সন্তানের পদবি হিসেবে তাঁর দ্বিতীয় স্বামীর পদবি গ্রহণ করা যাবে বলে নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। সম্প্রতি বিচারপতি কৌশিক চন্দ নির্দেশ দেন যে, নিজের ও তাঁর সন্তানের পদবি বর্তমান স্বামীর পদবির সঙ্গে বদলাতে পারবেন ওই মহিলা। এর জন্য কলকাতা পুরসভায় প্রয়োজনীয় নথি সমেত মহিলাকে আবেদন করতে হবে বলে হাই কোর্ট জানায়। সেই নথি যাচাই করে পদক্ষেপ করবে কলকাতা পুরসভা। তবে বিচারপতি চন্দ জানান, পদবি বদল বা পিতৃপরিচয়ে মায়ের দ্বিতীয় স্বামীর নাম লেখানোর আগে ওই সন্তানকে দত্তক নিতে হবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে। দত্তক নেওয়ার আগে সেই নাবালক সন্তানের জন্মের নথিতে পিতার নাম বদল করা যাবে না।
আদালত সূত্রে খবর, বিবাহ বিচ্ছেদের পরে দ্বিতীয় বিয়ে করেন মহিলা। এর পরে তিনি ও তাঁর স্বামী দু’জনে মিলেই মহিলার প্রথম বিয়ের সন্তানের পদবি ও পিতার নাম পরিবর্তনের আবেদন করেন। পুরসভায় আবেদন করলেও তা খারিজ করেন পুর কর্তৃপক্ষ। তাই কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয় দম্পতি। দম্পতির আইনজীবীরা জানান, জন্মদাতা পিতার সঙ্গে সম্পর্ক নেই পুত্রের, সন্তানের জন্মের পর লালন-পালনের সব দায়িত্ব একাই করেছেন মহিলা। তাঁর বর্তমান স্বামীও দায়িত্ব ভাগ করে নিয়েছেন। আইনজীবীদের আবেদন, নাবালক সন্তানের পিতৃপরিচয় ও পদবি পরিবর্তনের নির্দেশ দিক আদালত। প্রাক্তন স্বামীর আইনজীবীও আদালতে জানান, প্রাক্তন স্ত্রীর এই আবেদনে আপত্তি নেই তাঁর মক্কেলের।
পুরসভার আইনজীবী দাবি করেন, পুরসভার জন্ম ও মৃত্যু আইনের ধারা অনুযায়ী শুধু নামের ভুল সংশোধন করতে পারে পুরসভা। তবে পদবি বা পিতৃপরিচয় পাল্টানোর এক্তিয়ার নেই। একমাত্র দত্তক নেওয়া হলে আইনত, পদবি বা পিতৃপরিচয় পরিবর্তন করতে পারে পুরসভা। আইনজীবী আরও জানান, এই ক্ষেত্রে সংশোধনের নির্ধারিত ৬০ মাসে সময়সীমাও পার হয়ে গিয়েছে। রায়ের নথিতে বিচারপতি কৌশিক চন্দের পর্যবেক্ষণ, পুরসভার আইন অনুযায়ী নাম সংশোধনের নির্দেশিকায় ‘মূল নাম’ ও ‘পদবি’ দু’টিই সংশোধনের এক্তিয়ার রয়েছে পুরসভার। বিচারপতি আরও বলেন, ৬০ মাসের যে সময়সীমার উল্লেখ করা হয়েছে তা চূড়ান্ত নয়, বিশেষ ক্ষেত্রে এবং যথাযথ কারণে সময়সীমা পেরিয়ে গেলে পরেও সংশোধনের নির্দেশ দিতেপারে আদালত।