• চিপস্ চুরির অপবাদে আত্মঘাতী নাবালক, প্রকাশ্যে চাঞ্চল্যকর CCTV ফুটেজ...
    ২৪ ঘন্টা | ২৩ মে ২০২৫
  • কিরণ মান্না: পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ার গোসাইবেড় এলাকায় নাবালকের আত্মহত্যাকে কেন্দ্র করে জারি রয়েছে উত্তেজনা, বৃহস্পতিবার রাত থেকেই ছড়িয়েছে উত্তেজনা। এরই মধ্যে প্রকাশ্যে এসেছে সিসিটিভি ফুটেজ। যেখানে দেখা যায় যে সত্যিই ওই নাবালক চিপসের প্যাকেটটি কুড়িয়েই পেয়েছিল। সেই সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ্যে আসার পর সেই ফুটেজ ঘিরে তৈরি হয়েছে মতবিরোধ। ইতোমধ্যেই গ্রেফতার ৬ জন বিক্ষোভরত গ্রামবাসী। এদিকে কৃষ্ণেন্দুর মৃত্যুর পর থেকে পলাতক শুভঙ্কর।

    সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, ওই নাবালক সাইকেল নিয়ে যখন দোকানে যায় তখনই চিপসের প্যাকেট বাইরে পড়ে। দোকানে ঢুকে কাউকে না পেয়ে দোকানের বাইরে পড়ে থাকা চিপসের প্যাকেট তুলে নেয় সে। অপর ফুটেজে দেখা যায়, মা ছেলেকে শাসন করছেন, দোকানদার পাশে রয়েছেন। সিভিকের পরিবার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলেছে, ছেলেটির পরিবারের দাবি তার আগে অন্য জায়গায় ওই নাবালককে শাসন করেছে সিভিক। যে কারণে তার ছেলের মৃত্যু। কঠোর শাস্তির দাবি চায় পরিবার। তদন্তে নেমেছে পাঁশকুড়া থানা।

    পাঁশকুড়ার গোসাইবেড় এলাকায় চিপস চুরির অপবাদে অপমানিত হয়ে কীটনাশক খেয়ে গতকাল আত্মঘাতী হয় এক নাবালক। অভিযুক্ত সিভিক পুলিস শুভঙ্কর দীক্ষিত। গতকাল রাত্রি সাড়ে এগারোটা নাগাদ শিশুর দেহ এলাকায় পৌঁছালে উত্তেজনা বাড়ে।যে সিভিক ভলেন্টিয়ার অর্থাৎ দোকানদারের বিরুদ্ধে নাবালকটিকে মারধরের অভিযোগ হয়েছিল সেই অভিযুক্তের বাড়ির সামনে স্থানীয় ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা অভিযুক্তের বাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ দেখায় এবং ভাঙচুর করে, পরে পুলিসের সঙ্গে এলাকাবাসীরা বচসায় জড়ালে পাঁশকুড়া থানার পুলিস বাহিনী লাঠিচার্জ করে বিক্ষোভকারীদের উপর। পুলিসের লাঠিচার্জ হলে ছত্রভঙ্গ হয় বিক্ষোভকারীরা। নাবালকের মৃতদেহ তুলে নিয়ে পুলিস তাঁর বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। এলাকায় উত্তেজনা রয়েছে।

     

    উল্লেখ্য রবিবার সপ্তম শ্রেনীর ছাত্র কৃষ্ণেন্দু বাজারে চিপস কিনতে বেরিয়েছিল। পরিবারের অভিযোগ, যে দোকানে গিয়েছিল, সেখানে দোকান খোলা রেখে দোকানদার চলে গিয়েছিলেন। দোকানে ছিলেন না। তখন দোকানের বাইরে পড়ে থাকা একটি চিপসের প্যাকেট কুড়িয়ে নেয় কৃষ্ণেন্দু। তার কাছে পয়সাও ছিল, পরে এসে সে দোকান মালিক শুভঙ্কর দীক্ষিতকে দেবে ভেবেছিল। এরপর বাড়ি ফেরার পথেই দোকান মালিক শুভঙ্কর দীক্ষিত, যিনি পেশায় একজন সিভিক ভলান্টিয়ারও, তাঁর দোকানের চিপস 'চুরি' করে নিয়ে চলে যাচ্ছে বলে কৃষ্ণেন্দুকে ধাওয়া করে ধরে ফেলেন।

    অভিযোগ, শুভঙ্কর দীক্ষিত এরপর ওই কিশোরকে প্রকাশ্যেই চুরির অপবাদ দেন। কান ধরে ওঠবস করান। এমনকি মারধরও করেন। কৃষ্ণেন্দুর বাবা-মায়ের দাবি, চিপসের দাম সেইসময় তাঁদের ছেলে পরিশোধও করে দিয়েছিল। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন কৃষ্ণেন্দুর মা। অপমানিত অবস্থায় ছেলেকে বাড়ি নিয়ে যান মা। এরপর সপ্তম শ্রেণির কৃষ্ণেন্দু মা-কে লেখে, "মা আমি বলে যাচ্ছি যে আমি কুড়কুড়াটি রাস্তার ধারে কুড়িয়ে পেয়েছিলাম চুরি করিনি।" আর তারপরই অপবাদে-অপমানে আত্মঘাতী হয় ওই সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে ভর্তি করা হয় তমলুক মেডিকেল কলেজে। কিন্তু চিকিৎসকদের সব চেষ্টা ব্যর্থ করে বৃহস্পতিবার সকালে তাঁর মৃত্যু হয়।

     

  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)