• ন্যায্য ক্ষতিপূরণের দাবিতে কৃষক বিক্ষোভের জেরে থমকে গেল জাতীয় সড়ক নির্মাণের কাজ
    আনন্দবাজার | ২২ মে ২০২৫
  • কৃষকদের বিক্ষোভের জেরে থমকে গেল জাতীয় সড়ক ১১৬ এ-র নির্মাণকাজ। উপড়ে ফেলা হল সড়ক সীমানার স্তম্ভ। বুধবার পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষের বোয়াইচণ্ডীর ঘটনা। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, জাতীয় সড়কের জন্য জমি নেওয়া হলেও মেলেনি ন্যায্য ক্ষতিপূরণ।

    এ দিন ‘কৃষক ঐক্য মঞ্চ’-এর পক্ষ থেকে সদস‍্যেরা দাবি তুলেছেন, জমি অধিগ্রহণে তাঁদের ন্যায্য ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। বুধবার আন্দোলনের সূচনা হিসেবে কৃষকেরা এলাকায় বসানো জমি অধিগ্রহণের স্তম্ভগুলি উপড়ে ফেলেন। তাঁদের অভিযোগ, এই অঞ্চলের জমি কাঠা প্রতি ৯ লক্ষ ২৫ হাজার টাকায় বেচা-কেনা হলেও, জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ বিঘে প্রতি মাত্র ৮ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ করেছে। বাজারদরের তুলনায় এই মূল্য অত্যন্ত কম বলেই দাবি তাঁদের।

    বিক্ষোভ প্রসঙ্গে কৃষক নেতা বিনোদ ঘোষ বলেন, ‘‘কৃষকেরা উন্নয়নের বিরোধী নন। তাঁরা শুধু ন‍্যায্য ক্ষতিপূরণ চান। ১৯৫৬ সালের আইনে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে। অথচ ২০১৩ সালের অধিগ্রহণ আইনের সংশোধনী অনুসারেই তাঁরা ন‍্যায্য ক্ষতিপূরণ চাইছেন। সে দাবি না মানলে কাজ চলতে দেওয়া হবে না।’’

    কৃষক ঐক্য মঞ্চের আহ্বায়ক শেখ শাহজাহান জানান, চাষিদের চাপ দিয়ে জেলা প্রশাসন ভুল নীতি প্রয়োগ করছে। মঙ্গলবার উখরিদ এলাকা থেকে কাজে বাধা দেওয়া শুরু হয়েছে। তা ঘোষণা করেই করা হয়েছে। এরপর চাষিরা আদালতের দ্বারস্থ হবেন।

    সংগঠনের দাবি, সংশোধিত জমি অধিগ্রহণ নীতি মেনে প্রশাসনিক আধিকারিকদের কৃষকদের সঙ্গে আলোচনাও করতে হবে। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, জেলাশাসক একতরফাভাবে নোটিশ জারি করে কৃষকদের অন্ধকারে রেখে কাজ শুরু করেছেন। বহুবার প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে দরবার করেও প্রতিকার না পাওয়াতেই বাধ্য হয়ে এই আন্দোলনের বলে দাবি বিক্ষোভকারীদের। তাঁদের হুঁশিয়ারি, যদি ন্যায্য ক্ষতিপূরণ ও আলোচনার ভিত্তিতে সমস্যার সমাধান না হয়, তা হলে হাই কোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হওয়া হবে। প্রয়োজনে দীর্ঘমেয়াদি আন্দোলনও হবে।

    প্রশাসন সূত্রে খবর, নয়া সড়ক নির্মিত হচ্ছে মোট পাঁচটি জেলার উপর দিয়ে। এই রাস্তা হয়ে গেলে উত্তরবঙ্গের সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গের যোগাযোগ আরও ভাল হবে। খড়্গপুর থেকে মোরগ্রাম পর্যন্ত এই নতুন জাতীয় সড়ক নির্মিত হচ্ছে।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)