• থানায় হাজিরা দিতেই হবে দুই চাকরিহারা শিক্ষককে! বিকাশ ভবনের সামনে লোকসংখ্যাও কমাতে হবে, বলল হাই কোর্ট
    আনন্দবাজার | ২২ মে ২০২৫
  • বিকাশ ভবনের সামনে বিক্ষোভরত যে দু’জন চাকরিহারা শিক্ষককে পুলিশ তলব করেছিল, তাঁদের থানায় হাজিরা দিতেই হবে। বুধবার এমনটাই জানিয়ে দিল কলকাতা হাই কোর্ট। তবে পুলিশ তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও কড়া পদক্ষেপ করতে পারবে না। একই সঙ্গে আদালত জানিয়েছে, বিকাশ ভবনের সামনের জমায়েতে লোকসংখ্যা কমাতে হবে। এত মানুষ ওই এলাকায় জমায়েত করতে পারবেন না। বড় সংখ্যায় জমায়েতের জন্য অন্য কোনও জায়গা খুঁজতে বলা হয়েছে আন্দোলনকারীদের। আদালত জানিয়েছে, বিকাশ ভবনের সামনে চাইলে কয়েক জন বসতে পারেন।

    গত ১৫ মে বিকাশ ভবনের সামনে চাকরিহারাদের জমায়েতে উত্তেজনা ছড়িয়েছিল। পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় বচসা এবং ধস্তাধস্তি হয় আন্দোলনকারীদের। একটা পর্যায়ে বিক্ষুব্ধেরা বিকাশ ভবনের দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে পড়েছিলেন। পরে দরজায় আলাদা করে তালা ঝুলিয়ে দেন তাঁরা। ভিতরে আটকে পড়েন শতাধিক কর্মচারী এবং সাধারণ মানুষ। রাতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের বিকাশ ভবনের সামনে থেকে সরিয়ে দিয়েছিল। সে দিনের ঘটনায় সরকারি সম্পত্তি ধ্বংসের অভিযোগ এনে কয়েক জনকে তলব করেছিল বিধাননগর উত্তর থানার পুলিশ। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন সুদীপ কোনার এবং ইন্দ্রজিৎ মণ্ডল। পুলিশি হাজিরা এড়িয়ে তাঁরা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন।

    বুধবার চাকরিহারা ওই শিক্ষকদের মামলার শুনানি ছিল হাই কোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে। মামলাকারীদের বক্তব্য, সে দিন তৃণমূলের লোকজন এসে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি করেছিলেন। কিন্তু তাঁদের বিরুদ্ধে পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করেনি, উল্টে ডেকে পাঠানো হয়েছে শিক্ষকদের। বিচারপতি তাঁদের বক্তব্য শোনার পর জানান, তলব যখন করা হয়েছে, থানায় হাজিরা দিতেই হবে ওই শিক্ষকদের। তদন্তে সহযোগিতা করতে হবে তাঁদের। তবে পুলিশ তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করবে না বলে আদালত আশ্বাস দিয়েছে। চাকরিহারাদের আন্দোলনের অন্যতম মুখ চিন্ময় মণ্ডল বলেন, ‘‘আমাদের কয়েক জন আজ নিশ্চয়ই থানায় হাজিরা দিতে যাবেন। এই মামলার তদন্তকারী অফিসার এখন হাই কোর্টে। তিনি ফিরলে কথা হবে।’’

    এই মামলাতেই বিচারপতি জানান, বিকাশ ভবনের সামনে প্রায় দেড় হাজার মানুষ বসে আছেন। রাস্তা অবরুদ্ধ হয়ে পড়ছে। এতে দৈনন্দিন জীবনযাপনেও সমস্যা হচ্ছে। এটা করা যাবে না। এত মানুষ জমায়েত করতে চাইলে অন্য কোনও জায়গা তাঁদের খুঁজে নিতে হবে। বিকাশ ভবনের সামনে বসতে হলে কমাতে হবে জমায়েতের লোকসংখ্যা। বৃহস্পতিবার এই সংক্রান্ত মামলার পরবর্তী শুনানি। বিকাশ ভবনের পরিবর্তে কোথায় আন্দোলনকারীরা বসতে চান, তা বৃহস্পতিবার আদালতে জানাতে হবে তাঁদের। সেই অনুযায়ী আদালত প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেবে। চিন্ময় জানান, এই সংক্রান্ত আদালতের রায়ের কপি হাতে পেলেই আন্দোলনের পরবর্তী রূপরেখা ঠিক করা হবে। তার আগে তিনি কোনও মন্তব্য করতে চান না।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)