‘কোনও জঙ্গি যেন শেল্টার নিতে না পারে’, পুলিশকে সতর্ক করে গ্রামে গ্রামে টহলের নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা
আনন্দবাজার | ২২ মে ২০২৫
বাংলায় কোনও জঙ্গি যেন আশ্রয় নিতে না পারে! বুধবার উত্তরকন্যায় প্রশাসনিক ভবনে প্রশাসনিক বৈঠকে এ ভাবেই পুলিশ-প্রশাসনকে সাবধান করলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশমন্ত্রী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিশেষ করে সীমান্তবর্তী এলাকায় নজর রাখার কথা বলেন তিনি।
প্রশাসনিক বৈঠকে উত্তরবঙ্গের সীমান্তবর্তী জেলার এসপি, আইসি এবং ওসিদের সর্তক থাকার কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দাদেরও সাবধান করেন। মমতা জানান, ভিন্রাজ্য থেকে কেউ কেউ ঢুকে স্থানীয়দের ব্যক্তিগত তথ্য নিয়ে চলে যাচ্ছেন। তাঁর কথায়, ‘‘বাইরে থেকে ঢুকে অনেকে ভোটার কার্ড, আধার কার্ডের তথ্য নিয়ে চলে যাচ্ছে। আমাদের দলের অনেকের সঙ্গেও এটা হয়েছে। সাবধান থাকতে হবে, বাইরে থেকে এসে কোনও জঙ্গি যেন শেল্টার নিতে না পারে। আবার এখানে কেউ যেন মানুষকে মিথ্যা কথা বলে তথ্য হাতিয়ে নিতে না পারে।’’ মুখ্যমন্ত্রীর সাবধানবাণী, ‘‘কেউ চট করে কাউকে কোনও ডিটেল্স দেবেন না। ‘অথেনটিক’ কেউ কি না দেখে নেবেন। এ রকম (দুষ্কৃতী) ধরাও পড়েছে। ঝাড়গ্রাম, মালদহ, কোচবিহার, কলকাতা এবং ডায়মন্ড হারবারে পুলিশ ব্যবস্থা নিয়েছে।’’
পুলিশকে আরও সক্রিয় হতে বলেন পুলিশমন্ত্রী মমতা। তিনি জানান, ‘আগের মতো’ পুলিশ সক্রিয় থাকছে না। তাঁর কথায়, ‘‘বিজ্ঞানের অগ্রগতির যুগে মানুষ এগিয়ে চলছে। তেমন ক্ষতিকর শক্তিও বাড়ছে, যা আগে ছিল না। তাই সকলকে চোখ-কান খোলা রাখতে হবে। আগে পুলিশ তিন-চার বার এলাকায় এলাকায় ঘুরত। এখন ঘোরেই না!’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘যত বেশি পুলিশ ভ্যান নিয়ে ঘুরবে মানুষ তো জানবে যে পুলিশ ‘অ্যালার্ট’ আছে।’’
মুখ্যমন্ত্রী জানান, উত্তরবঙ্গের বর্ডার (সীমান্তবর্তী এলাকা) স্পর্শকাতর। সে জন্য খেয়াল রাখতে হবে পুলিশকে। তিনি বলেন, ‘‘বিএসএফ দায়িত্বে আছে বলে নিজেরা (পুলিশের উদ্দেশে) বসে থাকবেন না। এইতো কয়েক দিন আগে শীতলকুচি থেকে এক জনকে তুলে নিয়ে যাওয়া হল। উদয়ন (গুহ) আমাকে জানানোর পর তাঁকে বেল (জামিন) করিয়ে ছাড়িয়ে এনেছি আমরা। তাই ‘বিএসএফের দায়িত্বে আছে’ বলে নিজেরা বসে থাকবেন না। পাড়ার ক্লাবগুলো হাতে রাখুন। এটা পুলিশকে বলছি।’’ তিনি বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গ নৌকার মতো। সিকিমে বর্ষা হলে উত্তরবঙ্গ ডোবে। ঝাড়খণ্ডে হলে দক্ষিণবঙ্গ ডুবে যায়। ভুটানের বাঁধগুলো থেকে জল ছাড়া হলেও বন্যা হয়ে যায়।’’ এর পর কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগ করে মমতা বলেন, ‘‘অসম টাকা পায়। আমরা কিন্তু পাই না। বেশি কথা বললে তিক্ততা বাড়বে। আর তিক্ততার কথা বলতে চাই না। সিকিম, ভুটানে ইতিমধ্যে বন্যা হচ্ছে। সতর্ক থাকুন। মানুষের পাশে থাকতে হবে। বর্ষাকালীন কাজের প্রস্তুতি নিন।’’