শ্রীকান্ত ঠাকুর, বালুরঘাট: যুদ্ধের আবহে ভারতের ব্যবসায়ীরা যখন তুর্কিয়ের (Boycott Turkey) আপেল, মার্বেল বর্জন করছেন। ঠিক তখনই বাংলাদেশ (Boycott Bangladesh) থেকে আসা জনপ্রিয় কোম্পানির বিজ্ঞাপনে কন্ঠ দেওয়ার আহবান ফেরালেন বালুরঘাটের ভয়েস ওভার আর্টিস্ট। ভারতের প্রতি ওপার বাংলার কুরুচিকর মন্তব্য ও বিরূপ আচরণের প্রতিবাদ জানাতেই তার এই পদক্ষেপ বলে জানান ভয়েস ওভার আর্টিস্ট শুভজিৎ চট্টোপাধ্যায়।
বালুরঘাট শহরের কচিকলা পাড়ায় বাড়ি শুভজিৎবাবুর। তিনি একাধারে যেমন সংগীতশিল্পী। তেমন বাচিক শিল্পী হিসেবেও তার সুনাম রয়েছে। তিনি ২০২০ সালে অভিনেতা মীর ও সুদীপ্তা চক্রবর্তী বিচারে কলকাতায় গোল্ডেন ভয়েস তালিকায় উঠে এসেছিলেন। যেখানে প্রায় হাজার জন প্রতিযোগীর মধ্যে থেকে সেরা ১০ জনের মধ্যে তিনি ছিলেন। এমনকি উত্তরবঙ্গের মধ্যে তিনি একমাত্র ছিলেন। সানডে সাসপেন্স প্রজেক্ট, রেডিওর মহাভারতে অর্জুন, ভীম ও যুধিষ্ঠির কন্ঠ দিয়েছেন তিনি।
একটি প্রসিদ্ধ রঙের কোম্পানি, খাবার ডেলিভারি অ্যাপের বাংলা বিজ্ঞাপনেও তিনি কাজ করেছেন। এমনকি ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক, ডিসকভারি চ্যানেলেও বাংলা ভার্সনে তার কন্ঠ রয়েছে। যদিও কাজের শুরুর প্রথম দিকে তিনি বাংলাদেশের বিজ্ঞাপনে কন্ঠ দিয়েছেন। কিন্তু এই মুহূর্তে দেশাত্মবোধকে প্রাধান্য দেওয়া উচিত বলে তিনি মনে করছেন। যার জেরে গত বুধবার বাংলাদেশের জনপ্রিয় স্ন্যাকস ও ড্রিংকস কোম্পানির এক বিজ্ঞাপনের কাজ ফিরিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি, বিভিন্ন আঙ্গিকের শিল্পীদের নিজস্ব পরিসরে প্রতিবাদ করা উচিত বলেই তার মত।
ভয়েস ওভার আর্টিস্ট শুভজিৎ চট্টোপাধ্যায় জানান, 'শিল্পীসত্তার পাশাপাশি জাতীয়তা সত্তা রয়েছে। কাজের ক্ষেত্রে যে ভূমিকা আমাদের দেওয়া হয় সেটি করি। তেমন বাছবিচার শিল্পীরা করেন না। কিন্তু চলমান পরিস্থিতিতে দেখছি পাশের দেশের আমার দেশকে নিয়ে অপমানজনক ও ব্যাঙ্গাত্মক ভঙ্গিমা। যা মেনে নিতে পারিনি। শিল্পের প্রতি যেমন নিষ্ঠা ভালোবাসা রয়েছে। তেমনি দেশের প্রতিও দায়বদ্ধতা আছে। বাংলাদেশের বিরূপ প্রতিক্রিয়ার প্রতিবাদ জানাতেই তাদের এক কোম্পানির বিজ্ঞাপনে কন্ঠ দেওয়ার আহবানকে পত্রপাঠ বিদায় করেছি। আগে আমি দেশের নাগরিক, তারপর শিল্পী। এখানে আপোসের কোনও জায়গা নেই।'