কৃষ্ণকুমার দাস: ফের ধাক্কা রাম-বাম শিবিরে। আবার খাস কলকাতা লাগোয়া গড়িয়ার ঢালুয়ায় সংহতি সমবায় নির্বাচনে ৭৯ আসনের একটিতেও প্রার্থীই দিতে পারল না বাম ও গেরুয়া শিবির। প্রায় দশ বছর পর রাজ্য সরকারের হস্তক্ষেপে স্বচ্ছ নির্বাচন হলেও জন্মলগ্ন থেকেই সংহতি সমবায়ে ক্ষমতায় থাকা সিপিএম একটি আসনেও প্রার্থী দিতে পারেনি। উলটোদিকে স্থানীয় বিধায়ক ফিরদৌসি বেগমের নেতৃত্বে ৭৯ আসনেই সৎ ও পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির প্রার্থীদের মনোনয়ন দেয় তৃণমূল কংগ্রেস। বিরোধীদের কেউ মনোনয়নপত্র জমা না দেওয়ায় রবিবার ভোটের দিনেই তৃণমূলের ৭৯ জনকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী ঘোষণা করেন নির্বাচন পরিচালন আধিকারিক।
জয়ের পর সমবায়ের ভারপ্রাপ্ত অফিসাররা জয়ী প্রার্থীদের জানিয়েছেন, ‘‘বিদায়ী বোর্ডের বাম নেতারা প্রায় ১ কোটি টাকার বেশি সংস্থার থেকে ঋণ নিয়ে বসে আছেন। কিন্তু বারবার তাগাদা দেওয়া সত্ত্বেও সেই বিপুল পরিমান টাকা ফেরত দিচ্ছেন না বলে অভিযোগ।’’ গত মাসেই এই গড়িয়ায় ‘দ্য বোড়াল ইউনিয়ন কোঅপারেটিভ ব্যাঙ্ক লিমিটেড’ সমবায়ের নির্বাচনেও ৬৯টি আসনে বাম ও বিজেপি প্রার্থী দিতে না পারায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয় তৃণমূল। তৃণমূলের দাবি, স্রেফ টিভি চ্যানেলে ভেসে থাকা বাম ও বিজেপির নিচুতলায় সাধারণ মানুষের কাছে যে বিন্দুমাত্র সমর্থন নেই তার প্রমাণ সমবায়ের ভোট।
গড়িয়ার কবি সুভাষ মেট্রো স্টেশন থেকে অনতিদূরে ঢালুয়ার ‘সংহতি কোঅপারেটিভ ক্রেডিট সোসাইটি লিমিটেড’। দু’দশকের বেশি সময় ধরে বামেরা কাউকে না জানিয়ে ঘরোয়াভাবে ভোটের নামে পার্টির প্যানেল দিয়ে প্রহসন করত। একইভাবে ২০১৫ সালে প্রায় দু’হাজার সদস্যকে অন্ধকারে রেখে ভোটের নামে গোপনে প্যানেল পাশ করিয়ে পরিচালকমণ্ডলী গঠন করে সিপিএম। বামপন্থী এই পরিচালকমণ্ডলীর বিরুদ্ধে বহু অনিয়ম ও টাকা খরচের ক্ষেত্রে নানা অসঙ্গতি ধরা পড়েছে বলে অভিযোগ।
২০২০ সালে ওই পরিচালকমণ্ডলীর মেয়াদ শেষ হলেও নির্বাচন হয়নি। এবার ২০২৫ সালের ২২ মার্চ নির্বাচন ঘোষণা হয়। গত ২৪ এপ্রিল থেকে ২৭ এপ্রিল মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষদিন ছিল। গোপনে রাম-বাম বোঝাপড়া করেও সোনারপুর উত্তরে তৃণমূলের শক্তিশালী সংগঠনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামার জন্য কোনও সদস্যকে রাজি করাতে পারেনি। স্বভাবতই পরিচালকমণ্ডলী নির্বাচনে ৭৯টি আসনেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয় তৃণমূল কংগ্রেস। রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিলর নজরুল আলি মন্ডলের নেতৃত্বে বিজয়ী প্রার্থীরা এদিন জয়ের সার্টিফিকেট নেন।