জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী মিলিয়ে রাজ্যের ২৬ হাজার জনের চাকরি বাতিলের পর রাজ্য় সরকারের বড় স্বস্তি। রাজ্য সরকার ঠিক করেছিল এসএসসিতে ৬৮০০ অতিরিক্ত শূন্যপদ সৃষ্টি করা হবে। সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। সেই মামলায় সুপ্রিম কোর্ট সিবিআই তদন্তের নির্দেশ খারিজ করে দিল। ফলে বড় স্বস্তি পেলে রাজ্য সরকার। সর্বোচ্চ আদালত জানিয়েছে, অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরির পরামর্শ নেওয়া হয়েছিল। রাজ্যপালেরও অনুমোদন নেওয়া হয়েছিল। তাই এতে আদালতের হস্তক্ষেপের হস্তক্ষেপের প্রয়োজন নেই।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালে রাজ্য মন্ত্রিসভা ওইসব শূন্যপদ সৃষ্টির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। ওই সিদ্ধান্তে অনুমোদনও দেন রাজ্যপাল। অভিযোগ ছিল নিয়োগ দুর্নীতি ঢাকতে ওইসব শূন্যপদ সৃষ্টি করা হয়। কিন্তু হাইকোর্টের বক্তব্য ছিল ওই শূন্যপদ সৃষ্টি আইনি পথে হয়নি। সিবিআই প্রয়োজনে মন্ত্রিসভার সদস্যদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে। ওই নির্দেশ শেষপর্যন্ত খারিজ করে দিল সর্বোচ্চ আদালত।
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি জানিয়েছেন, ওইসব শূন্যপদ নিয়ে তদন্তের প্রয়োজনই নেই। কারণ পুরো প্যানেলটাই বাতিল হয়েছে। মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত এবং রাজ্যপালের অনুমোদন রয়েছে। তাই আদালতের হস্তক্ষেপের জায়গা নেই। প্রসঙ্গত, রাজ্য মন্ত্রিসভার সদস্যদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তা রাজ্য সরকারের জন্য বিরাট ধাক্কা হতো। সেই ধাক্কা থেকে রক্ষা পেল রাজ্য সরকার।
সর্বোচ্চ আদালতের ওই রায় নিয়ে আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, সর্বোচ্চ আদালত সিবিআই তদন্তের নির্দেশ খারিজ করেছে এই জন্যই যে মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তের উপরে কোনও তদন্ত সিবিআই করতে পারে না। মন্ত্রিসভার বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্ত হবে না। কিন্তু অন্যান্য যে ক্রিমিন্যাল মামলা চলছে তা চলবে।
ওই রায় নিয়ে বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য বলেন, যে ২৬ হাজার চাকরি চলে গিয়েছে তাদের নিয়ে একটি দুর্বল চিত্রনাট্য তৈরি করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তারা স্বস্তি পেল না, এটাই বড় প্রশ্ন। যারা প্রতারিত, দিনের পর দিন রাস্তায় বসে রয়েছে তার কী স্বস্তি পেল? এখন যে অতিরিক্ত শূন্যপদ সৃষ্টি করা হয়েছিল সেইসব পদের কী হল? তা এখনও স্পষ্ট নয়। যে সমস্যা ছিল সেটাই রয়েছে। চাকরি হবে না। এখনও অযোগ্য়দের আলাদা করা সম্ভব। অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায় তাতে সাহায্য করবেন বলেছেন।
এনিয়ে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ বলেন, মন্ত্রিসভার বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্ত, যে কুত্সা করা হচ্ছে তা বিরোধীরা বিশেষ করে কয়েকজন আইনজীবী চালিয়ে যাচ্ছিলেন। আজ সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট কোনওভাবে মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কোনও সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিচ্ছে না। এটা তো বিরোধীদের মুখোশ খুলে দেওয়ার মতো সিদ্ধান্ত। বিরোধিতার রাজনীতি যারা করছেন তাদের মুখোশ খুলে গেল সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তে।