মধ্যরাতে কলকাতা শহরে মেয়েদের ‘রাত দখলের’ কর্মসূচির মধ্যেই তুলকালাম পরিস্থিতি আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। সেখানকার জরুরি বিভাগের গেট ভেঙে ভিতরে প্রবেশের চেষ্টা করার অভিযোগ উঠেছে। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ। কিন্তু কারা ভাঙচুর চালালেন, তা স্পষ্ট নয়। স্থানীয় সূত্রে খবর, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে কয়েক জন পুলিশকর্মীও জখম হয়েছেন। পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনাস্থলে যেতে পারেন কমিশনার বিনীত গোয়েল।
বুধবার রাতে আরজি কর হাসপাতালের সামনে থেকেও রাত দখলের কর্মসূচি শুরু হয়েছিল। অভিযোগ, ঠিক তার পরেই আচমকা এক দল যুবক-যুবতী পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে হাসপাতালের ভিতরে ঢোকেন। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের গেট ভেঙে ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করেন। আরজি কর হাসপাতালে সামনে প্রতিবাদীদের মঞ্চও ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। হাসপাতাল সূত্রে খবর, বহিরাগতদের হাতে লাঠি, রড, পাথর ছিল। পাথর ছুড়ে একাধিক ওয়ার্ডের কাচ ভাঙা হয়েছে। ভাঙা হয়েছে পুলিশের গাড়িও।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ইতিমধ্যেই গোটা এলাকা ঘিরে ফেলেছে পুলিশ। র্যাফ নামানো হয়েছে। বিশাল পুলিশবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে এলাকায়। কাঁদানে গ্যাসও ছোড়া হয়েছে। হামলাকারীদের একাংশকে তাড়া করে এলাকাছাড়া করেছে পুলিশ। কিন্তু তার পরেও পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। অভিযোগ, পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছোড়া হচ্ছে এখনও। হামলাকারীদের ছোড়া ইটে এক পুলিশকর্মীর মাথাও ফেটেছে।
কিন্তু হাসপাতালের একাংশের অভিযোগ, পুলিশ শুরুতে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে। হঠাৎ হামলার ঘটনায় কেন দ্রুত পদক্ষেপ করল না পুলিশ? এত ক্ষণ ধরে কী ভাবে তাণ্ডব চালালেন ‘বহিরাগতেরা’?
এই ঘটনার নিন্দা করেছেন তৃণমূল নেতা শান্তনু সেন। তিনি বলেন, ‘‘যা হল, তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। আমরা সকলেই চাই, আরজি করের ঘটনায় দোষীর শাস্তি হোক। কিন্তু আন্দোলনের নামে যদি কোনও রোগীকে ফিরে যেতে হয়, তা কখনওই কাম্য নয়। আবার এ ভাবে ভাঙচুরের ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না।’’
আরজি করে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় তোলাপাড় গোটা রাজ্য। তার প্রতিবাদেই বুধবার রাত দখলের কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়েছিল। তার মাঝেই আরজি করে হামলার ঘটনায় নানাবিধ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কারা এই হামলা চালিয়েছেন, সেই প্রশ্নের এখনও উত্তর মেলেনি।