• অভিনব কায়দায় ব্যাপক জালিয়াতি চলছিল, অশোকনগর পুলিশ গ্রেফতার করল তিনজনকে
    হিন্দুস্তান টাইমস | ২৯ জুলাই ২০২৪
  • জালিয়াতির নয়া সংযোজন দেখে পুলিশের কপালে ভাঁজ পড়েছিল। পুলিশের কাছে অভিযোগ আসে, আধার কার্ড–সহ বেশ কয়েকটি আইডেন্টিটি কার্ড ব্যবহার করে চলত দেদার জালিয়াতি। অন্যের আধার কার্ড নম্বর ব্যবহার করে নানা জিনিসপত্র কেনা হতো। আর ইএমআই সিস্টেম সংযুক্ত হতো সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির আধার কার্ডের নম্বরে। সুতরাং কিছু না জেনেই গুণতে হতো কড়ি। এভাবেই কেনা হতো মোটরবাইক, এসি এবং নানা দামি সরঞ্জাম। কিন্তু কিছু না করেই কেন দিতে হবে কিস্তির টাকা?‌ এই প্রশ্নে ঋণদানকারী সংস্থা বনাম সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির মধ্যে সংঘাত চলত। উলটে ঋণখেলাপের চিঠি গিয়ে পৌঁছত আধার কার্ড হোল্ডারের কাছে। এই প্রতারণা চলছিল অশোকনগর এলাকায়। এই ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে এক মহিলা–সহ মোট তিনজন প্রতারককে।

    এই আধার কার্ড নম্বর জোগাড় করা হতো অভিনব উপায়ে। ফোন করে আধার কার্ড ভেরিফিকেশনের নাম করে নম্বর জেনে নেওয়া হতো। তার পরই শুরু হতো জালিয়াতির কাজ। এভাবেই একের পর এক মানুষজন প্রতারণার শিকার হন। আর তার জেরে তাঁরা অশোকনগর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। প্রতারিত হন অশোকনগর এলাকার বান্ধব পল্লীর বাসিন্দা সুজিত দাস। এই পর পর নানা অভিযোগ জমা পড়ায় তদন্তে নেমে পুলিশ সূত্র খুঁজতে থাকে। আর তারপরই এক মহিলা–সহ মোট তিনজনকে গ্রেফতার করে। এলাকার মিষ্টির দোকানে কাজ করে সংসার চালান সুজিত দাস। সেখানে তাঁর আধার কার্ড ব্যবহার করেই কেনা হয় দামি জিনিস। একদিন ব্যাঙ্ক থেকে চিঠি আসতেই চমকে ওঠেন সুজিত দাস।


    পুলিশ সূত্রে খবর, এই প্রতারণা করার কাজে একটা টিম কাজ করত। সেটা ধৃতদের জেরা করেই জানা গিয়েছে। একাধিক ব্যক্তির আধার কার্ড নম্বর ব্যবহার করে মাসিক ইএমআই স্কিমে মোটরবাইক থেকে শুরু করে এসি, টিভি, ফ্রিজ কেনা হতো। এমনকী দামি মোবাইল পর্যন্ত এভাবে কেনা হয়েছে। ওই প্রতারক দলের সদস্যরা প্রযুক্তি ব্যবহার করে জিনিসপত্র কিনত। আর তারপর সেসব জিনিস ওএলএক্স অ্যাপের মাধ্যমে বিক্রি করে দিত। প্রথমে দু’‌একটি কিস্তি দিলেও পরে আর দিত না প্রতারকরা। প্রত্যেক মাসে ইএমআই না আসায় আধার কার্ডের নম্বর যাঁর তাঁকে চিঠি থেকে শুরু করে নানাভাবে হেনস্থা হতে হতো।

    সুজিত দাসের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটে। প্রথমে চিঠি আসে। পরে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করে আসে ফোন এবং বাড়িতে ঋণদানকারী সংস্থার কর্মী। এমন পরিস্থিতিতে পড়ে অশোকনগর থানায় অভিযোগ জানান সুজিত দাস। তদন্তে নেমে পুলিশ এক দম্পতি –সহ আরও এক ব্যক্তিকে অশোকনগর থেকে গ্রেফতার করে। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হয় দুটি মোটরবাইক ও এসি মেশিন। যার মূল্য প্রায় চার লক্ষ টাকা। সাংবাদিক বৈঠক করে হাবড়ার এসডিপিও প্রসেনজিৎ দাস বলেন, ‘‌এই চক্রের সঙ্গে আরও কেউ যুক্ত কিনা সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযুক্তদের দফায় দফায় জেরা করা হচ্ছে। ধৃতদের বারাসত আদালতে পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠিয়েছে।’‌
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)