উত্তর ২৪ পরগনায় লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের বর্ধিত টাকা পাচ্ছেন ২২ লক্ষ, ভোটে ডিভিডেন্ডের আশায় তৃণমূল
বর্তমান | ০১ মে ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত: লক্ষ্মীর ভাণ্ডারই ভরসা তৃণমূলের। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা মতো প্রায় ২২ লক্ষ মহিলার অ্যাকাউন্টে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের বর্ধিত টাকা ঢুকতে শুরু করেছে। লোকসভা নির্বাচনে এই ইস্যুকে হাতিয়ার করেই উত্তর ২৪ পরগনায় ভোটের ময়দানে ঝাঁপিয়েছে রাজ্যের শাসকদল। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এই পুঁজি ডিভিডেন্ড দেবে তৃণমূলকে। মহিলা ভোটব্যাঙ্কের একটি বড় অংশই যে তৃণমূলের দিকে ঝুঁকবে, সে ব্যাপরে নিশ্চিত তাঁরা। তাঁদের মতে, একুশের বিধানসভা নির্বাচনে সমস্ত রাজনৈতিক সমীকরণ ওলটপালট করে দিয়েছিল মহিলা ভোট। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই এবারের লোকসভা ভোটে মহিলা ভোটকে বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছেন রাজনীতির কারবারিরা।
এই ফর্মুলাতেই উত্তর ২৪ পরগনায় নিজেদের গড় ধরে রাখতে মরিয়া জোড়াফুল শিবির। সীমান্ত লাগোয়া এই জেলায় সিএএ ইস্যুতে কেন্দ্রীয় সরকারকে আক্রমণ শানাচ্ছে তৃণমূল। এই পরিস্থিতিতে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের বর্ধিত টাকা বাড়তি অক্সিজেন দেবে তৃণমূলকে। ‘কথা রাখার নাম তৃণমূল’ এই শ্লোগানকে মানুষের কাছে তুলে ধরে লড়াইয়ের ময়দানে নিজেদের অবস্থান আরও শক্তিশালী করছে তারা।
২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূলের ‘মাস্টার স্ট্রোক’ ছিল লক্ষ্মীর ভাণ্ডার। ২০২৪ সালে লোকসভা ভোটের আগে বাজেট অধিবেশনের সময়েই লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে টাকা বাড়ানোর কথা জানিয়েছিল রাজ্য সরকার। নতুন অর্থবর্ষে রাজ্যের যে সমস্ত মহিলা সংশ্লিষ্ট প্রকল্পে ৫০০ টাকা করে পেতেন এখন তাঁরা পাবেন এক হাজার টাকা। অন্যদিকে, যে সমস্ত উপভোক্তা ১০০০ টাকা করে পেতেন, তাঁরা পাবেন ১২০০ টাকা। নতুন অর্থবর্ষের শুরু থেকেই বর্ধিত টাকা অ্যাকাউন্টে ঢুকতে শুরু করেছে। অনেকেই মনে করছেন, তৃণমূলের ভোট ব্যাঙ্কে তার প্রভাব পড়তে পারে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় মোট ভোটারের সংখ্যা ৮২ লক্ষ ১০ হাজার ৪০৭। যার মধ্যে মহিলা ভোটার ৪০ লক্ষ ৬১ হাজার ৫৫২। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের আওতায় আসার শর্ত, সংশ্লিষ্ট মহিলার বয়স ২৫ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে হতে হবে। সরকারি হিসেব বলছে, জেলায় লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের সুবিধা পান ২১ লক্ষ ৭৩ হাজার ১০২ জন। জেলা পরিষদের সভাধিপতি নারায়ণ গোস্বামী বলেন, আমাদের নেত্রী কথা রাখেন। বিজেপি শুধু মিথ্যা ভাষণ দেন। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার হল আমাদের প্রতিশ্রুতি পূরণের একটি নাম। যা আগামী দিনে গোটা দেশে মডেল হবে। নিন্দুকরা যাই বলুক না কেন, বাংলার মহিলারা আমাদের নেত্রীর উপর আস্থাশীল, সুরক্ষিত। এই প্রকল্প নিয়ে আমরা বাড়ি বাড়ি প্রচার করছি।
বিজেপি’র বারাসত সাংগঠনিক জেলার সহ সভাপতি নবনীতা চক্রবর্তী বলেন, লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের ফল কী হতে পারে, সন্দেশখালির মহিলারা তা দেখেছেন। অনুদানের রাজনীতিতে মহিলারা শাসকের কাছে মাথা নত করবেন না। বাংলার মানুষ এর জবাব দেবে।