• শাহের সভায় হার লুট মহিলাদের কান্নার রোল
    বর্তমান | ০১ মে ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, রসুলপুর: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সভায় ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ করল ‘গোল্ডেন গ্যাং’। একের পর এক মহিলার গলা থেকে সোনার হার উধাও হয়ে গেল। সভা শেষে কান্নার রোল পড়ে যায়। কেউ কেউ আবার ছুটলেন মেমারি থানায়। গ্যাংটি সোনার হার ছাড়া দামি মোবাইলও টার্গেট করে। রসুলপুরের বিষ্ণুপুরের বাসিন্দা ঝুমা চৌধুরী বলেন, কখন গলার হারটি দুষ্কৃতীরা ছিঁড়ে নিয়েছে তা বুঝতে পারিনি। গলায় হাত দিয়ে দেখি হার নেই। অনেক কষ্ট করে টাকা জমিয়ে সেটি বানিয়েছিলাম। বাড়ির লোকজনদের কী জবাব দেব বুঝতে পারছি না।

    সভা শেষে আর এক মহিলা গড়াগড়ি দিয়ে কান্নাকাটি করছিলেন। তিনি বলেন, চাষ করে সংসার চলে। ফসল বিক্রির টাকায় হারটি বানিয়েছিলাম। খুব সখের জিনিস ছিল। এভাবে চুরি হয়ে যাবে কোনওদিন ভাবিনি। এরকম হবে জানলে সভাতেই আসতাম না। রসুলপুরের আর এক মহিলা বলেন, সভা শেষে বেরিয়ে আসার সময় মনে হল কেউ একজন হারে টান দিল। কিন্তু পিছন ফিরে আর কাউকে দেখতে পাইনি। নিমেষের মধ্যে হার নিয়ে দুষ্কৃতী চম্পট দিয়েছে।

    অমিত শাহের সভায় ছিনতাইবাজরা দাপট দেখানোয় তৃণমূল কটাক্ষ করতে ছাড়েনি। দলের নেতা দেবু টুডু বলেন, বিজেপিতে চোর, ছিনতাইবাজরা রয়েছে। সেটা সাধারণ মহিলারা বুঝতে পারেননি। তাঁদের ভুল বুঝিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখানে বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা লুটপাট করেছে।

    এদিন রসুলপুরে সভা করতে এসে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দুর্নীতি ইস্যুতে আগাগোড়া তৃণমূলকে তোপ দাগেন। তিনি বলেন, মেদিজি বাংলার জন্য ১০লক্ষ কোটি টাকা পাঠিয়েছিল। সেটা গ্রামে পৌঁছয়নি। তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা টাকা খেয়েছে। বিজেপি ৩০টির বেশি আসন পেলে তাদের উল্টোদিকে লটকে দেওয়া হবে। ইডি এবং সিবিআই তদন্ত হচ্ছে বলে দিদি চিৎকার করছে। দিদির মন্ত্রীর বাড়ি থেকে কোটি কোটি টাকা পাওয়া যাচ্ছে। দিদি যতই চিৎকার করুক টাকা আত্মসাৎকারীদের জেলে পাঠানো হবে।

    এদিন শাহর সভায় জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কর্মী এবং সমর্থকরা এসেছিলেন। পাশের জেলা নদীয়া থেকেও অনেকেই আসেন। জেলায় বেশ কয়েকটি বড় মাঠ রয়েছে। কিন্তু সেগুলিতে সভা করার ঝুঁকি বিজেপি নেয়নি। তারা রসুলপুরের বিষ্ণপুরের ছোট মাঠে সভা করেছে। মহিলাদের বসার জায়গায় সমর্থক সেজে ছিনতাইবাজরা ঢুকেছিল বলে পুলিসের অনুমান। তারা এই কাজে দক্ষ। বিভিন্ন সভাতে ঢুকেই তারা লুটপাট চালাচ্ছে। এক পুলিস আধিকারিক বলেন, ভিড়ের মাঝে দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করা খুব কঠিন বিষয়। সভায় আসার জন্য কাউকেই বাধা দেওয়া হয় না। তবে ভিড়ের মধ্যে সোনা বা দামি গয়না না পরে আসাই উচিত। এক মহিলা বলেন, তীব্র গরমের মধ্যেও নেতাদের কথা শুনে সভায় এসেছিলাম। এভাবে চোখে জল নিয়ে বাড়ি ফিরতে হবে বলে ভাবতে পারিনি।
  • Link to this news (বর্তমান)