• শান্তিপুরে বিজেপির নির্বাচনী কার্যালয় উদ্বোধনের দু’দিন পর থেকে তালাবন্ধ
    বর্তমান | ০১ মে ২০২৪
  • সুদীপ্ত কুণ্ডু, রানাঘাট: লোকসভা নির্বাচনকে মাথায় রেখে চলতি মাসের শুরুতে শান্তিপুর শহরে একটি নির্বাচনী কার্যালয়ের উদ্বোধন করেছিলেন রানাঘাট কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী জগন্নাথ সরকার। কথা ছিল, নির্বাচনের আগে ২৪ ঘন্টাই খোলা থাকবে সেটি কিন্তু উদ্বোধনের দু’দিন পর থেকেই বিজেপির সেই কার্যালয় তালাবন্ধ। কর্মী-সমর্থকদের আনাগোনা নেই। হার নিশ্চিত জেনেই পদ্ম শিবিরের উপর দলীয় কর্মীদের আর উৎসাহ নেই বলেই কার্যালয়ের এই দশা বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এ নিয়ে বিজেপিকে কটাক্ষও করেছে তৃণমূল। যদিও কার্যালয় নিয়মিত খোলা হয় বলেই পাল্টা দাবি বিজেপি নেতৃত্বের।

    শান্তিপুর শহরের পাবলিক লাইব্রেরি সংলগ্ন এলাকায় একটি বেসরকারি লজ রয়েছে। সেই লজের একটি ঘরকে নির্বাচনী কার্যালয় হিসেবে ভাড়া নিয়েছিল বিজেপি নেতৃত্ব। লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে বেরিয়ে গত ৩ এপ্রিল কার্যালয়টির উদ্বোধন করেছিলেন জগন্নাথ সরকার। শান্তিপুর বিধানসভায় বিজেপির যাবতীয় নির্বাচনী কর্মসূচি এই কার্যালয়ে থেকেই ঠিক হওয়ার কথা ছিল। ভোটের আগের মুহূর্তে সেখানে কার্যকর্তাদের ভিড় উপচে পড়বে বলে আশাও করেছিলেন কর্মী-সমর্থকদের একাংশ। অথচ, বাস্তবে দেখা গিয়েছে, কার্যালয় উদ্বোধনের দু’দিন পর থেকেই শাটার নামানো। বন্ধ কার্যালয়ের দরজার বাইরে লাগানো রয়েছে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ছবি সম্মিলিত একটি তোরণ। ভেতরের ঘরের দরজাতেও ঝুলছে তালা।

    যদিও কার্যালয়টি বন্ধ থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেছে বিজেপি। পদ্ম নেতৃত্বের দাবি, বড় প্রবেশপথটি বন্ধ থাকলেও পাশেই একটি ছোট রাস্তা রয়েছে। সেখান দিয়েই দলের নেতা-কর্মীরা কার্যালয়ে যান। নিয়মিত খোলা হয় কার্যালয়। বিজেপির শান্তিপুর মণ্ডল-৩ সভাপতি অঞ্জন বিশ্বাস বলেন, ‘বড় শাটার নামানো রয়েছে বলে বাইরে থেকে অনেকেই ভুল ভাবছেন। আমাদের নির্বাচনী কার্যালয়ের ভেতর ২৪ ঘন্টা দুজন কর্মী থাকেন। শান্তিপুরে আমাদের প্রচারের যাবতীয় বৈঠক, আলোচনা এই অফিস থেকেই হয়। আমরা অর্থাৎ কার্যকর্তারা দু’বেলাই সেখানে যাই।’ যদিও স্থানীয় ব্যবসায়ীদের একাংশ প্রশ্ন তুলেছেন, নির্বাচনী কার্যালয়ের বাইরের শাটার নামানো থাকলেও ভেতরের দরজায় তালা ঝুলছে কেন? বিজেপি ওই লজের একটি ঘরকে কার্যালয় হিসেবে ভাড়া নিয়েছিল বটে। কিন্তু সেখানে তো কাউকেই যেতে আসতে দেখা যায় না।

    বিজেপির দলীয় কার্যালয় বন্ধ থাকা নিয়ে পদ্ম শিবিরকে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল। শান্তিপুর শহর তৃণমূলের সভাপতি নরেশলাল সরকার বলেন, ‘বিজেপির কর্মীরাই ওদের প্রার্থীকে নিয়ে চূড়ান্ত হতাশ। ওই দলটার কোনও জনভিত্তি নেই। এবারের নির্বাচনে আমাদের মুকুটমণি অধিকারীর কাছে গো হারা হারবেন বিজেপি প্রার্থী। বাস্তবটা জেনেই ওদের কর্মীরা এখন আর পার্টি অফিসে আসছেন না।’ রাজনৈতিক মহলের একাংশ বলছে, শান্তিপুর জগন্নাথ সরকারের নিজের এলাকা। অথচ, শান্তিপুর ব্লক তো বটেই, শহরেও বিজেপির সাংগঠনিক অবস্থা বিশেষ ভালো নয়। প্রচার, র‌্যালিতেও সেরকম জমায়েত হচ্ছে না। যে কার্যালয় ভোটের আগে ২৪ ঘন্টা খোলা থাকার কথা, সেখানে তালা ঝোলার স্পষ্ট অর্থ, কর্মীরা প্রার্থীর হয়ে আর প্রচারে নামতে চাইছেন না।

     নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)