• প্রার্থী দেবতনুকে নিয়ে প্রশ্ন বিজেপির অন্দরেই, বিকল্প হিসেবে কেন ব্রাত্য ভূমিপুত্ররা
    বর্তমান | ০১ মে ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, সিউড়ি: বীরভূম কেন্দ্রে প্রাক্তন আইপিএস দেবাশিস ধরের মনোনয়ন বাতিল হওয়ায় প্রার্থী করা হয়েছে দেবতনু ভট্টাচার্যকে। কিন্তু বিকল্প হিসেবে কেন দেবতনু? জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা বা স্থানীয় কোনও পুরনো নেতা নয় কেন? ভোটের কয়েকদিন আগে এমনই প্রশ্ন উঠেছে বীরভূম বিজেপির একাংশের অন্দরে। বিজেপির কার্যকর্তা থেকে সাধারণ কর্মীরা ঘনিষ্ঠ মহলে এই প্রশ্ন তুলেছেন। যখন ঘোষিত প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল হবে টের পাওয়া গিয়েছিল, তখন জেলার ভূমিপুত্র বা জেলা সংগঠনের কোনও নেতাকে কেন বিকল্প হিসেবে প্রার্থী ঠিক করা হল না? এনিয়ে চর্চা চলছে চলছে বীরভূমের রাজনীতিতে। আদালতের মুখাপেক্ষি না থেকে দেবতনু ভট্টাচার্যকেই প্রার্থী হিসেবে অফিসিয়ালি ঘোষণা করে নতুন করে প্রচারে জোর দিতে চাইছে বিজেপি। তবে প্রার্থী নিয়ে সংগঠনের ভিতরে অসন্তোষ আদৌ কমানো যাবে কি না, সেই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

    প্রার্থীপদ বাতিল হওয়ার পর দলের ঘোষিত প্রার্থী প্রাক্তন আইপিএস দেবাশিস ধর আদালতের দ্বারস্থ হন। দ্রুত শুনানির আর্জি রাখলেও তা আদালতে এখনও নিষ্পত্তি হয়নি। এই অবস্থায় বিকল্প হিসেবে মনোনয়ন জমা করা দেবতনু ভট্টাচার্যকেই সামনে রেখে বিজেপি এগতে চাইছে। নতুন করে ভোটের দু’সপ্তাহ আগে দেবতনুর নামে দেওয়াল লিখন চলছে। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ মঙ্গলবার দেবতনুর সমর্থনেই সিউড়িতে সভা করেন। দেবাশিসবাবু সেই মঞ্চে বসে থাকলেও তাঁর নাম একবারও উচ্চারণ করলেন না যোগী। এই অপ্রস্তুত হওয়ার মতো পরিস্থিতির জন্য দলীয় উচ্চ নেতৃত্বকেই কেউ কেউ দায়ী করছেন! সেই সঙ্গে জেলার কর্মীরা মূল প্রশ্ন তুলছেন, কেন দেবতনুকেই প্রার্থী করা হল? তিনি আসানসোলের বাসিন্দা। এই জেলার সঙ্গে তাঁর পূর্ব সম্পর্ক থাকলেও তিনি ভূমিপুত্র নন। এর আগে বিধানসভা ভোটেও পরাজিত হয়েছিলেন। জেলার সংগঠন সম্পর্কে তাঁর খুব বেশি ধারণা থাকার কথা নয়। এহেন দেবতনুকে প্রার্থী হিসেবে বিবেচিত করা দলীয় সিদ্ধান্তই প্রশ্নের মুখে পড়ছে। সেক্ষেত্রে যোগ্য প্রার্থী হিসেবে কোনও ভূমিপুত্রকে করা যেত। যদি বিকল্প হিসেবে জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহাকে প্রার্থী করা হতো, তাহলে তৃণমূলের শতাব্দীর বিরুদ্ধে লড়াই আরও জোরদার হতো বলে মত অনেকের। পাশাপাশি দুবরাজপুরের বিধায়ক অনুপ সাহার নামও কেউ কেউ বলছেন। তবে, এনিয়ে উচ্চ নেতৃত্বের সাফাই, যে সময় বিকল্প প্রার্থী দেওয়া হয়েছিল, তখন দলের জেলার পদাধিকারী কেউ মনোনয়ন জমা করলে গোষ্ঠীকোন্দল চরমে পৌঁছে যেত। তা এড়িয়ে যেতেই দেবতনুকে প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত। 

    রাজ্যস্তরের এক নেতা বলেন, এটা আমাদের দলীয় কৌশল। দলের উচ্চ নেতৃত্ব যেভাবে বলেছে সেভাবে এগনো হয়েছে। ধ্রুব এখনও অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তিনি কবে দেবতনুর সমর্থনে প্রচারে নামবেন বোঝা যাচ্ছে না। বিধায়ক অনুপবাবু বলেন, প্রার্থী কে হবেন সেটা নিয়ে বাকিদের অত চিন্তা না করলেও হবে। মানুষ পদ্মফুলের ছাপ দেখে ভোট দেবেন। মোদিজির গ্যারান্টিতে মানুষ ভরসা রাখবেন। আমাদের গঠনমূলক পার্টি। উচ্চ নেতৃত্ব যেভাবে বলবে সেভাবেই এগনো হবে। 

    তৃণমূলের জেলা সহ সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, যে নেতা বীরভূমে এসে রবীন্দ্রনাথের নাম একবারও উচ্চারণ করেন না, তিনি প্রার্থীর নামটা শেষমেশ ঘোষণা করলেন এটাই অনেক। এবার অন্তত বিজেপির কর্মীরা তাঁদের দলের কে প্রার্থী জানতে পারলেন।
  • Link to this news (বর্তমান)