লন্ডন: ‘একটা গাড়ি সোজা সামনের বাড়িটায় ধাক্কা মারে। আওয়াজ শুনে বাইরে বেরিয়ে আসি। হলুদ জামা পরা লোক গাড়িটা থেকে বেরিয়ে এল। হাতে তরোয়াল। খানিকক্ষণ এদিক-ওদিক ঘুরল। কয়েকটি বাড়ির দরজার সামনে গিয়ে বসল। লুকিং গ্লাস দিয়ে দেখলাম, সোজা হেঁটে গেল রাস্তার দিকে। এলোপাথাড়ি ঘোরাতে লাগল তরোয়ালটা। বেপরোয়াভাবে’, কাঁপতে কাঁপতে এটুকুই বলতে পারলেন রবার্ট হ্যারিসন। আতঙ্ক, ভয়, আশঙ্কা তখন ঘিরে ধরেছে তাঁকে। সদ্য ঘুম ভাঙা মানুষটা মঙ্গলবার চোখের সামনে দেখেছেন এক ভয়াবহ দৃশ্য! যে ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে এক কিশোর। জখম চারজন। লন্ডনের হেইনল্টে।
স্থানীয় সময় সকাল সাতটা। হেইনল্টে একটি বাড়িতে ধাক্কা মারে ৩৬ বছর বয়সি ওই ব্যক্তির গাড়ি। তরোয়াল হাতে বেরিয়ে একাধিক বাড়ির দরজায় কড়া নাড়ে সে। দরজার বাইরে বসেও থাকে কিছুক্ষণ। কেউ সাড়া দেয় না। তারপর সরু গলি থেকে বেরিয়ে রাস্তায় যায় অভিযুক্ত। তরোয়াল চালাতে থাকে। তাড়া করতে থাকেন। টার্গেট? নিরীহ পথচারীরা। আচমকা দু’জন পথচারীর বুকে চালিয়ে দেয় তরোয়াল। সামনে দিয়ে একটি ১৩ বছর বয়সি শিশু স্কুলে যাচ্ছিল। রেহাই পায়নি সেও। ততক্ষণে অনেকেই ক্যামেরাবন্দি করেছেন ভয়াবহ এই ঘটনা। আতঙ্কে চিৎকার করতে থাকেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। অনেকের ঘুম ভাঙে চেঁচামিচিতে। কয়েকজন প্রতিহত করতে এগিয়ে আসেন অভিযুক্তকে। লাভ হয়নি। খবর দেওয়া হয় পুলিসে। ২২ মিনিট পর ঘটনাস্থলে পৌঁছয় মেট্রোপলিটন পুলিস। বাধা দিতে গেলে দু’জন পুলিস অফিসারও আহত হন। ‘আপনারা ঈশ্বরে বিশ্বাস করেন?’, ক্রমাগত চিৎকার করতে থাকে অভিযুক্ত। কোনওক্রমে তার তরোয়াল ফেলে দেয় পুলিস। ছুটে পালানোর চেষ্টা করে করেলও ব্যর্থ হয়ে অবশেষে ধরা পড়ে পুলিসের জালে।
মেট্রোপলিটন পুলিস জানিয়েছে, ওই শিশু সহ পাঁচজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতালেই মৃত্যু হয়েছে শিশুটির। বাকিরা চিকিৎসাধীন। তাদের আঘাত গুরুতর নয় বলেই খবর। অভিযুক্ত ব্যক্তি কোনও জঙ্গিগোষ্ঠী বা বিশেষ সম্প্রদায়ের সদস্য নয় বলেই জানিয়েছে পুলিস। অন্য কোনও ব্যক্তিও ঘটনায় যুক্ত নয়। অভিযুক্তর পূর্বে কোনও মানসিক অসুস্থতার নজির রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ব্রিটেনের হোম সেক্রেটারি জেমস ক্লেভারলির প্রতিক্রিয়া, ‘ভয়াবহ!’