• পর্যটন করিডর তৈরির সুযোগ থাকলেও পরিকল্পনারই অভাব, ক্ষোভ চুঁচুড়াবাসীর
    বর্তমান | ৩০ এপ্রিল ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, চুঁচুড়া: ভোট মরশুমে রাজনৈতিক দলগুলির নানা প্রতিশ্রুতি থাকে। পাশাপাশি থাকে আম জনতার কিছু প্রত্যাশা, কিছু প্রস্তাব। সমসময় যে তা বিজলি-পানি-সড়ক নিয়েই হয়, এমনটা নয়। যেমন, লোকসভা ভোটের চলতি প্রচারপর্বে চুঁচুড়ার বাসিন্দাদের মধ্য থেকে উঠে আসছে ট্যুরিজম সার্কিট বা পর্যটন করিডর না হওয়ায় আফশোসের কথা। চুঁচুড়াতে নানা দেশি, বিদেশি স্থাপত্য রয়েছে। আছে ঐতিহাসিক ও ইতিহাসের স্মৃতিবিজড়িত স্থান। বাসিন্দাদের অভিযোগ, এতগুলি ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ স্থান নিয়ে কোনও সামগ্রিক পরিকল্পনার কথা কোনও নির্বাচনেই বিশেষ শোনা যায় না। অথচ, এরকম একটি পর্যটন করিডর করা গেলে একই সঙ্গে সংস্কৃতি, কর্মসংস্থান, অর্থনীতির মতো নানা ক্ষেত্রে ইতিবাচক বদল আসবে। 

    চুঁচুড়ার সাংস্কৃতিক কর্মী সৌমিত্র সিংহ রায়। বয়স পঞ্চাশের কোঠা ছুঁয়ে ফেলেছে। তিনি বলেন, ‘বহু নির্বাচন পেরিয়ে গিয়েছে। আমি কোনও দলকে নির্দিষ্ট করে অভিযুক্ত করতে চাই না। শুধু বলার কথা এই যে, চুঁচুড়ার একটি সমৃদ্ধ ইতিহাস আছে। দর্শনীয় স্থান আছে। সেগুলিকে পরিকল্পনা করে কাজে লাগানোর কথা কেন ভাবা হবে না?’ চুঁচুড়া স্টেশন রোডের বাসিন্দা গোপাল দাস একসময় আইসক্রিমের ফ্যাক্টরির দক্ষ কর্মী ছিলেন। এখন ব্যবসা করেন। তিনি বলেন, ‘সব দলেরই প্রতিশ্রুতি শুনছি। কিন্তু কেউই বিকল্প কর্মসংস্থানের কথা বলছেন না। চুঁচুড়াতে পর্যটনের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের সুযোগ থাকলেও তা কাজে লাগানো হচ্ছে না।’ সদ্য স্নাতক হয়েছেন ব্যান্ডেলের অভিরূপ রায়। তাঁর মত খুব স্পষ্ট। বলেন, ‘আমরা পুরুলিয়তে পলাশ বনের ছবি তুলতে যাই। নদীয়াতে কৃষ্ণমন্দির দেখতে যাই। ব্যান্ডেলে শতাব্দী প্রাচীন চার্চ, ইমামবাড়া, বন্দে মাতরম ভবন আছে। সমৃদ্ধ ইতিহাস আছে। কিন্তু তা নিয়ে কোনও পরিকল্পনা নেই।’

    প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে দেশের প্রধানমন্ত্রী ব্যান্ডেলে সভা করে বন্দেমাতরম ভবনের প্রসঙ্গ তুলেছিলেন। অভিযোগ, তখন হুগলিতে তাঁরই দলের সাংসদ। কথা হয়েছিল, কিন্তু কাজ কিছু হয়নি। এবারও তিনি ভোটপ্রার্থী। এনিয়ে চুঁচুড়া পুরসভার চেয়ারম্যান অমিত রায় বলেন, ‘হুগলিতে ট্যুরিজম সার্কিটের জন্য আমরা রাজ্যকে প্রস্তাব দিয়েছি। একটি পর্যটন নিবাস করার পরিকল্পনাও আছে। কিন্তু বিজেপির সাংসদ পাঁচ বছরে চুঁচুড়ার পর্যটন শিল্পের জন্য কী করেছেন?’ পণ্ডিত রামগতি ন্যায়রত্নের বংশধর আঞ্চলিক ইতিহাস গবেষক সপ্তর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপির নেতা। 

    জানা যায়, ২০২১ সালে প্রধানমন্ত্রীকে স্থানীয় সংস্কৃতির তথ্য সরবরাহের কাজে তিনিও যুক্ত ছিলেন। সপ্তর্ষিবাবু বলেন, ‘বন্দেমাতরম ভবন রাজ্য সরকারের অধীনস্থ। সাংসদ বেশ কিছু প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কিন্তু তা গুরুত্ব পায়নি।’ আম জনতার চাহিদা, দাবি আছে। ভোট আছে, রাজনৈতিক দল আছে। আর আছে তরজা। ভোট আসে ভোট যায়, প্রতিবারই সাধারণের দাবি ভেসে ওঠে এবং তরজায় হারিয়ে যায়। 
  • Link to this news (বর্তমান)