• তোলাবাজি আর পঞ্চায়েতের প্রকল্পে দুর্নীতির নগদ টাকায় অস্ত্র কিনতেন শেখ শাহজাহান
    বর্তমান | ২৯ এপ্রিল ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ঠিকাদারদের কাছ থেকে নেওয়া তোলাবাজি এবং পঞ্চায়েতের বিভিন্ন প্রকল্পে দুর্নীতির টাকায় বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র কিনতেন সন্দেশখালির ‘বেতাজ বাদশা’ শেখ শাহজাহান। হাওলা করে এই টাকা পৌঁছত অস্ত্র কারবারিদের কাছে। তদন্তে এই তথ্যই পেয়েছে বলে দাবি করেছে সিবিআই। ওই সূত্রের খবর, এমনকী পলায়ন পর্বে শাহজাহানের নির্দেশমতোই সব আগ্নেয়াস্ত্র বিভিন্ন স্থানে সরিয়ে ফেলা হয়। এক্ষেত্রে দক্ষিণ ২৪ পরগনার এক প্রভাবশালী ব্যক্তির ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর সঙ্গে শাহজাহানের সম্পর্ক কাটছেঁড়া করছেন তদন্তকারীরা। এদিকে যে-বাড়ি থেকে আগ্নেয়াস্ত্রগুলি উদ্ধার হয়েছে, তার মালিক আবু তালেব মোল্লা এখনও বেপাত্তা। তদন্তে নেমে সিবিআই জেনেছে, প্রথম থেকেই আগ্নেয়াস্ত্র কেনার নেশা ছিল শাহজাহানের। বাম জমানায় দেশি আগ্নেয়াস্ত্র কিনতেন তিনি। ২০১১ সালের প্রথম দিকে গোরু পাচারের কারবার শুরু করেন ‘ভাই’। বিভিন্ন জায়গা থেকে গোরু এনে ইচ্ছামতী দিয়ে বাংলাদেশে পাচার শুরু করেন তিনি। এরই সঙ্গে, শাহজাহান সীমান্তের ওপারে পাচার করতে থাকেন চাল, চিনি, পেঁয়াজ, কাপড়সহ বিভিন্ন জিনিসপত্র। এই বেআইনি কারবার রমরমিয়ে চলায় তাঁর হাতে প্রচুর নগদ অর্থ আসতে শুরু করে। তদন্তকারীরা জেনেছেন, এই সমস্ত ব্যবসা থেকে দৈনিক তাঁর হাতে আসত তিন-চার কোটি টাকা। তখন থেকেই উন্নতমানের বিদেশি অস্ত্র কেনার শুরু তাঁর। বেআইনি অস্ত্রের কারবারিরা তাঁর ইটভাটায় যেত। টাকা-পয়সার লেনদেন চলত সেখানেই। প্রথম দিকে আগ্নেয়াস্ত্র রাখা হতো ভাটাতেই। পরে বাড়িতেই আলাদা বাঙ্কার তৈরি করেন তিনি বিভিন্ন ধরনের আর্মস রাখার জন্য। 

    সিবিআইয়ের দাবি, প্রথমে আগরহাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান এবং পরে প্রধান হওয়ায় ভুয়ো জব কার্ড তৈরি করে সরকারের কাছ থেকে টাকা তোলা শুরু করেন শেখ শাহজাহান। পঞ্চায়েতে বিভিন্ন ধরনের কাজ পাইয়ে দেওয়ার বিনিময়ে ঠিকাদারদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের তোলাবাজি ‘ভাই’ নিতেন বলে তথ্য পেয়েছেন অফিসাররা। এইভাবে আসা বিপুল পরিমাণ নগদ টাকা শাহজাহান বিনিয়োগ করেন আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি কিনতে। কোনও ধরনের নতুন বন্দুক বাজারে এলেই সেটি সবার আগে কিনতেন তিনি। এরপর সেগুলি নিজের ইটভাটায় নিয়ে গিয়ে পরীক্ষা করতেন শাহজাহান এবং লাইসেন্সপ্রাপ্ত বন্দুকধারীদের ঠিকানা জোগাড় করে যোগাযোগ করতেন তাঁদের সঙ্গে। সংশ্লিষ্ট লোকজনের কাছ থেকে গুলিও কেনা হতো। এর পাশাপাশি অন্য জায়গা থেকেও কার্তুজ আসত বলে সিবিআই সূত্রের খবর।  
  • Link to this news (বর্তমান)