• বালাসাহেব আবেগে মহারাষ্ট্রে ধসে যাবে বিজেপি
    বর্তমান | ২৯ এপ্রিল ২০২৪
  • মুম্বই: উধাও ‘মোদি ঝড়’। ফিকে ‘মোদির গ্যারান্টি’ও। প্রথম দু’দফায় এমনই আশঙ্কায় ভুগছে খোদ গেরুয়া ব্রিগেড। গোটা দেশের এই চিত্রের ব্যতিক্রম নয় মহারাষ্ট্রও। তবে এই রাজ্যের সঙ্গে দেশের বাকি অংশের ফারাক একটাই—বালাসাহেব আবেগ। এই একটি ইস্যুই এবার মারাঠাভূমে ভোটের মারকাটারি ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়িয়েছে। মৃত্যুর ১৪ বছর পরও। সন্দেহাতীতভাবে এর প্রধান কারণ অবশ্যই ‘অপারেশন লোটাস’। সরকার ‘দখলের’ স্বার্থে দল ভাঙানো, এমনকী একনাথ সিন্ধের নেতৃত্বে প্রায় গোটা শিবসেনা দলটাই ভেঙে বেরিয়ে বিজেপির সঙ্গে জোট সরকার গঠন। তখনই প্রশ্ন উঠেছিল, এই ভাঙাগড়ার খেলাকে ভালোভাবে নিচ্ছে তো মহারাষ্ট্রের মানুষ? জবাবের জন্য অপেক্ষা ছিল লোকসভা ভোট পর্যন্ত। আর এখন মারাঠাভূমের আবহতেই স্পষ্ট, সহানুভূতির  হাওয়া বইছে শিবসেনার উদ্ধব থ্যাকারে ও শারদ পাওয়ারের পালে। এই সমীকরণকে এড়িয়ে যাওয়ার সাহস দেখাচ্ছেন না এনসিপির অজিত পাওয়ার গোষ্ঠীর নেতা এবং প্রাক্তন মন্ত্রী ছগন ভুজবলও। তাঁর সাফ কথা, ‘এনডিএর লড়াই এবার মোটেও সহজ হবে না। জনমত বালাসাহেবের আবেগের সঙ্গে গেলে ধস নামলেও অবাক হওয়ার কিছু নেই’।

    মহারাষ্ট্রে ৪৮টি লোকসভা আসন। ইতিমধ্যে দু’দফায় মোট ১৩টি কেন্দ্রে ভোট হয়ে গিয়েছে। এখানে এবার লড়াই শিবসেনা (সিন্ধে শিবির), এনসিপির (অজিত গোষ্ঠী) সঙ্গে ইন্ডিয়া শিবিরের কংগ্রেস, শারদ পাওয়ারের এনসিপি ও শিবসেনার উদ্ধব গোষ্ঠীর মধ্যে। সেটাই বেসুরো করে দিচ্ছে বিজেপির জোটসঙ্গীদেরও। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ছগন ভুজবল বলেছেন, ‘শিবসেনার মধ্যে ভাঙন ধরানোর পরেই বালসাহেবের প্রতি মানুষের পুরনো আবেগ ফিরে এসেছে। তা থেকেই উদ্ধবের প্রতি মানুষের সহানুভূতি বেড়েছে। এনসিপি ভেঙে যাওয়ার পর শারদ পাওয়ারের প্রতিও একই আবেগ কাজ করছে।’ যদিও পরক্ষণেই ভুজবল দাবি করেন, ‘মানুষের ভরসা রয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উপর।’ ছগন নিজে এবার ভোটে লড়ছেন না। অজিত পাওয়ার তাঁকে নাসিক থেকে প্রার্থী করতে চেয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত ভুজবলকে রাজি করানো যায়নি।

    এই অবস্থানকে অনেকটাই যুদ্ধ শেষ হওয়ার আগে হার স্বীকার করার সঙ্গে তুলনা করছে রাজনৈতিক মহল। সপ্তাহখানেক আগে একই আশঙ্কার কথা শোনা গিয়েছিল অমরাবতীর বিজেপি প্রার্থী নবনীত রানার গলায়। রাখঢাক না করেই তিনি বলেছিলেন, ‘এখানে আর মোদি ঝড় কোথায়? সবই উধাও!’ পরে তিনি অবশ্য দলের চাপে ঢোঁক গিলতে বাধ্য হন। 

    তাতে আশঙ্কার মেঘ ঢাকা পড়ছে না। অস্ত্রে শান দিচ্ছেন উদ্ধব-শারদরাও। রবিবার বারামতী কেন্দ্রে মেয়ে সুপ্রিয়া সুলের হয়ে প্রচারে গিয়ে পাওয়ার বলেন, ‘সংবিধান পরিবর্তনের জন্যই বিজেপি ৪০০’র বেশি আসন পেতে চাইছে। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে জেলে ঢুকিয়েছে। গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়েছে পদ্ম শিবির।’ 
  • Link to this news (বর্তমান)