• ‘শুষ্ক-ভেজা গরমের টেস্ট শেষ কবে?’ একটাই প্রশ্ন কাহিল শহরবাসীর
    বর্তমান | ২৯ এপ্রিল ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: আকাশে শুষ্ক-আর্দ্র হাওয়ার খেলা। আর এই যৌথ আক্রমণে প্রাণান্ত কলকাতার।

    কিছুদিন আগে ঘাম গিয়েছিল উবে। আবহাওয়া ছিল শুষ্ক। শরীর জ্বলছিল। অচেনা গরমে তেতে পুড়ে কাহিল শহরবাসী। তার দিনকয়েক বাদেই আবার চেনা ঘাম। প্যাচপ্যাচে পরিচিত গরম গলদঘর্ম করে দিল শহরকে। শুকনো আর জবজবে গরমের মাঝে স্যান্ডউইচ হয়ে গেল গোটা কলকাতা। 

    ভিড় বাসে এক ব্যক্তির সরস মন্তব্য, ‘এ যেন ঘাম আর শুকনো গরমের টেস্ট ম্যাচ খেলা হচ্ছে।’ এক ব্যক্তির প্রশ্ন, ‘কেন দাদা টি-টোয়েন্টির যুগে টেস্ট ম্যাচ বলছেন কেন?’ ওই ব্যক্তির চটজলদি উত্তর, ‘খবর পড়ছেন না? পুরো টেস্ট সিরিজ চলছে। শেষ হওয়ার কোনও সম্ভাবনাই নেই।’ সেই ঘাম বিদায় নিল শনিবার রাত নাগাদ। রবিবার ফের শুকনো গরম হাওয়া শরীর দিল জ্বালিয়ে।

    রবিবার সকাল থেকেই সূর্য যেন গিলতে এল। সকাল সাতটায় বাজারে দাঁড়িয়ে এক বৃদ্ধ বললেন, ‘বড় ছাতাটা আনলাম না। সকালের রোদই তো নেওয়া যাচ্ছে না। বেলা বাড়লে মেরে ফেলবে দেখছি।’ বেলা গড়ালে তাঁর কথাই সত্যি হল। ১১টা থেকেই ফাঁকা হয়ে গেল শহর। রবিবার বাড়তি ভাড়া দিতে রাজি হলেও এসি বাস সেভাবে পেলেন না যাত্রীরা। বাজারে বেলার দিকে মাছ-সবজি বিক্রেতারাও কম দামে বিক্রি করলেন জিনিসপত্র। ‘কেন?’ পাটুলির এক মাছ বিক্রেতা বললেন, ‘বেশিক্ষণ রেখে দিলে পচে যাবে। বরফ কিনতেই প্রচুর খরচ হয়ে যাচ্ছে। তাই কেনা দামেই বেচে দিচ্ছি।’ 

    রবিবার গরম অনেক বাড়িয়ে দিল উষ্ণ হাওয়া। অধিকাংশ মানুষ রুমাল-ওড়নায় মুখ ঢাকলেন। এক বাইক চালক বললেন, ‘গরম হলকা লাগছে মুখে। এখন তো দেখছি, গরম পড়লে বাইকও চালানো যাবে না।’ অনেকে বললেন, ‘রোদে পুড়ে বাড়ি গিয়ে স্নান করলেও শরীর থেকে তাপ যাচ্ছে না।’ আর গোটা শহর একে অপরকে জিজ্ঞেস করেই চলেছে, ‘এর থেকে নিস্তার পাব কবে? বৃষ্টি কবে হবে?’ এর উত্তর মোটেও সুখের নয়। আপাতত যা খবর, আগামী দিন সাতেক বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা দূর অস্ত। যা শুনে এক ব্যক্তির প্রতিক্রিয়া অসাধারণ। তাঁর বক্তব্য, ‘ব্যাঙগুলোরও সব বিয়ে হয়ে গেল। কিন্তু বৃষ্টির দেখা মিলল না। ঘোর কলি কাল বুঝলেন মশাই। ঘোর কলি।’

    এইসব প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে শহরবাসীর মুখে মুখে। তার সঙ্গে, অনেকেই গরম নিয়ে আলোচনায় শুরুই করছেন, ‘এপ্রিল মাস এখনও শেষ হয়নি’ এই বলে। সামনের মে মাসে আর কী কী বাকি আছে, সেই আশঙ্কাতেই প্রাণ ওষ্ঠাগত বঙ্গবাসীর। 
  • Link to this news (বর্তমান)