• জমল না মিঠুনের রোড শো
    বর্তমান | ২৯ এপ্রিল ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, আসানসোল: ‘তকদির’ থেকে ‘ঝড়ের ফাঁদ’—হিন্দি, বাংলা মিলিয়ে বক্স অফিস কাঁপানো বহু সিমেনা করেছেন একসঙ্গে। বলিউডে একদা ‘সেরা জুটি’ বলেও তকমা পেয়েছেন দু’জনে। হলে দর্শকও টেনেছেন। রাজনীতিতে দু’জনের বাস এখন ভিন্ন মেরুতে। হলের বাইরেও দর্শক টানার প্রতিযেগিতায় নেমেছেন তাঁরা। কিন্তু পর্দার বাইরের জগত যে অনেক সমীকরণের উপর নির্ভর করে, সেটা আসানসোলের বিজেপি প্রার্থী সুরেন্দ্র সিং আলুওয়ালিয়ার সমর্থনে প্রচারে এসে টের পেলেন মিঠুন চক্রবর্তী।

    রবিবার আসানসোলের এসবি গরাই রোড ধরে রোড শো করেছিলেন মিঠুন। জনগণের মন জয়ে মহিলা ঢাকি থেকে শুরু করে অনেক কিছুরই বন্দোবস্ত রেখেছিলেন আলুওয়ালিয়া। কিন্তু সাংগঠনিক দুর্বলতার কারণেই হোক কিংবা বিজেপিতে মোহভঙ্গ—সেভাবে জমে ওঠেনি মিঠুনের রোড শো। মিছিলে কার্যত ঢল নামতেও দেখা যায়নি বিজেপি কর্মীদের। সাধারণ মানুষ হাসপাতাল মোড়, মহিশীলা খেজুরতলা মোড়ে কিছুটা ভিড় করলেও বেশিরভাগ রাস্তাতেই মিছিল এগল সামান্য সংখ্যক লোকজন নিয়ে। তার উপর এদিন রোড শোয়ে আছড়ে পড়ল জনতার ক্ষোভ-বিক্ষোভও। তা নিয়েও বেশ অস্বস্তিতে মিঠুন থেকে গেরুয়া শিবির। 

    মহিশীলা বটতলা পর্যন্ত রোড শো হওয়ার কথা ছিল। সেখান পর্যন্ত না গিয়েই মিঠুন বিলাসবহুল গাড়িতে উঠে পড়েন। বটতলায় মিঠুনকে দেখতে দাঁড়িয়ে থাকা মেয়েরা যখন  গাড়ির কাঁচ নামানোর অনুরোধ করেন তখন তাঁদের নিরাপত্তারক্ষী ও পুলিস ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। তাতেই ক্ষোভে ফুঁসে ওঠেন তাঁরা। সেটা যাতে মিডিয়ায় সম্প্রচারিত না হয় তার জন্য তারস্বরে জয় শ্রীরাম ধ্বনি তুলে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন কিছু বিজেপি কর্মী। তানিয়া দাস, অজয় সাহারা বলছিলেন, ‘মহাগুরুকে দেখার জন্য দাঁড়িয়ে ছিলাম। গাড়ির কাঁচই খুললেন না। পরে ক্ষমা চেয়ে মিঠুন চক্রবর্তী বলেন, ‘তীব্র গরমে আমি আর পারছিলাম না। তাই গাড়িতে উঠে গিয়েছিলাম।’ অথচ, এমনই এক দগ্ধ দিনে একই রোড ধরে রোড শো করেছিলেন তৃণমূলের তারকা প্রার্থী শত্রুঘ্ন সিনহা। সঙ্গে ছিলেন মন্ত্রী মলয় ঘটক ও স্থানীয় নেতারা।  তাতেই অবরুদ্ধ হয়ে গিয়েছিল এসবি গরাই রোড। ‘বিহারীবাবু’কে দেখতে রাস্তার দু’পাশেম মানুষের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। 

    বাংলায় এসে অমিত শাহ, নাড্ডারা ৩০-৩৫টি আসন পাওয়ার টার্গেট বেঁধে দিচ্ছেন বিজেপিকে। কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণভাবে মিঠুন এ প্রসঙ্গে মুখ খোলেননি। তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়, বাংলায় ৪২টি আসনের মধ্যে বিজেপি ক’টা পাবে? জবাবে তিনি বলেন, ‘এটা আমি বলব না। সবে ১০-১২টা সভা করেছি। ভালো রেসপন্স পাচ্ছি।’ আসানসোল ঘুরে কী বুঝলেন? তিনি বলেন, ‘আমি আলুওয়ালিয়াজিকে বলেছি, আপনার পক্ষে ভালো রেসপন্স রয়েছে।’ গোটা দেশে কী বিজেপি ৪০০ আসন পাবে? মিঠুনের মন্তব্য, ‘চারশোর কম হলেও আমাদের কিছু এসে যায় না। যতদিন মোদি ম্যাজিক রয়েছে, এই ভারত বিজেপি শাসিত থাকবে।’ 

    আর পর্দার জুটি শত্রুঘ্নর সম্পর্কে মহাগুরুর মূল্যায়ন—‘অনেক বড় মাপের রাজনৈতিক নেতা। ওঁর অভিজ্ঞতার কাছে আমরা শিশু। তবু বলব, একজন  ভালো নেতা ভুল দলের রয়েছেন।’ এদিন, জামুড়িয়াতেও আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থীর সমর্থনে সভা করেন মিঠুন চক্রবর্তী।
  • Link to this news (বর্তমান)