• দু'দফার ভোটের পরই 'প্যানিক' বাটনে চাপ BJP-র! রাজ্য নেতাদের জন্য তৈরি ‘চাবুক’
    হিন্দুস্তান টাইমস | ২৯ এপ্রিল ২০২৪
  • লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দু'দফায় ভোটদানের হার দেখে বিজেপির অন্দরে প্যানিক বাটনে চাপ পড়ে গেল। আগামী পাঁচটি দফায় যাতে কোনওভাবে ভোটদানের হার কমে না যায়, সেজন্য দলের ক্যাডারদের আরও দ্বিগুণ পরিশ্রম করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিজেপির কয়েকজন বর্ষীয়ান নেতা জানিয়েছেন, বিহার, মধ্যপ্রদেশ এবং রাজস্থানের মতো রাজ্যে যত শতাংশ মানুষ ভোটকেন্দ্রে এসেছেন, তাতে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের রক্তচক্ষু গিয়ে পড়েছে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের সংগঠনের উপরে। যে রাজ্যে যে নেতা দায়িত্বে আছেন, তাঁর থেকে পূর্ণাঙ্গ ব্যাখ্যা তলব করেছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।

    বিষয়টির সঙ্গে অবহিত বিজেপির এক বর্ষীয়ান নেতা অবশ্য দাবি করেছেন, প্রথম দুটি দফায় যে ভোটদানের হার কম ছিল, সেটা যে স্রেফ শাসক দলের প্রতি রাগ বা ক্ষোভের কারণে হয়েছে, সেটা বলা যাবে না। নাম গোপন রাখার শর্তে তিনি বলেন, ‘ভোটদানের হার যে কম হয়েছে, সেটার অর্থ এটাও হতে পারে যে বিরোধীদের কাজে হতাশ হয়ে গিয়েছেন মানুষ। বিরোধীদের কোনও দিশা না থাকায় এবং কোনও নেতা না থাকার কারণেও তাঁরা হতাশ হয়ে যেতে পারেন। সেজন্য তাঁরা হয়তো ভোট বের হননি।’ 

    কেউ-কেউ আবার যুক্তি দর্শাচ্ছেন যে এই প্রবল গরমের জন্য ভোট দিতে বাড়ি থেকে বেরোতে চাইছেন না মানুষ। অনেকের আবার দাবি যে সপ্তাহান্তে তথা ছুটির দিনে ভোট থাকলে শহুরে ভোটারদের মধ্যে ছুটি কাটানোর প্রবণতা বেশি থাকে। আর ভোটের জন্যে সপ্তাহের কাজের দিবসে ছুটি পেলেও তাঁরা সেই বিরতিটা উপভোগ করতে চান। উল্লেখ্য, প্রথম দু'দফায় ভোটগ্রহণই হয়েছে শুক্রবার। 

    যদিও সেইসব ব্যাখ্যায় নিজেদের ভুলিয়ে রাখার পথে হাঁটেনি বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। রাজনৈতিক মহলের মতে, অনেক সময় এরকম হয় যে সবকিছু ঠিকঠাক না থাকলেও তৃণমূল স্তর থেকে রিপোর্ট আসে যে সবকিছু ‘ঠিক আছে’। কিন্তু নির্বাচনের গণনার পরে একেবারে উলটো ফল দেখতে পান। কিন্তু সেই বিজেপি সেই পথে হাঁটেনি। বরং রাজ্য সংগঠনগুলিকে সতর্ক করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। নিতে বলা হয়েছে উপযুক্ত ব্যবস্থা।

    রাজ্যস্তরের নেতাদের যে খামতি আছে, তা স্বীকার করে নিয়েছেন এক বিজেপি নেতা। মানুষের কাছে পৌঁছে যাওয়ার জন্য যতটা পরিকল্পনা করা হয়েছিল, ততটাও বাস্তবায়িত হয়নি। মধ্যপ্রদেশের এক বিজেপি নেতা বলেন, ‘কয়েকটি এলাকায় সাংসদ এবং বিধায়করা সেভাবে রাস্তায় নামেননি। আর সেই বিষয়টি নজর এড়িয়ে যায়নি। (রাজ্যস্তরের) শীর্ষনেতাদের সেই গা-ছাড়া মনোভাবের প্রভাব বুথস্তরের কর্মীদের উপরও পড়তে পারে। যাঁরা আমাদের প্রচার-পর্বের ভরকেন্দ্র। সেই বিষয়টির সমাধান করা হচ্ছে।’

    নাম গোপন রাখার শর্তে বিজেপির বর্ষীয়ান নেতারা জানিয়েছেন, যে পাঁচটি দফার ভোটগ্রহণ বাকি আছে, তাতে যেন ভোটদানের হার কমে যাওয়ার ট্রেন্ড অব্যাহত না থাকে। আর সেটা নিশ্চিত করতে হবে প্রতিটি রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাকে। বিশেষত বিজেপি যেখানে ৪০০ আসন জয়ের (এনডিএ জোট মিলিয়ে) কথা বলছে, সেখানে যে কোনওভাবে গা-ছাড়া মনোভাব দেখানো যাবে না, তাও বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। 

    এবারের লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফায় ভোটদানের হার ছিল ৬৫.৫ শতাংশ। যা ২০১৯ সালে ছিল ৬৯.৯ শতাংশ। আর দ্বিতীয় দফার প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, ৮৮টি লোকসভা কেন্দ্রে ভোটদানের হার ৬৫ শতাংশের আশপাশে ছিল। যা ২০১৯ সালের থেকে কম।
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)