• মহিলারা কি গর্ভাবস্থায় অ্যালকোহল পান করতে পারেন? কী বলছে গবেষণা
    হিন্দুস্তান টাইমস | ২৮ এপ্রিল ২০২৪
  • অনেক মহিলাই মদ্যপান করে থাকেন। গত কয়েক বছরে নারীদের মধ্যে মদ্যপানের প্রবণতা বেড়েছে। কেউ কেউ গর্ভবতী অবস্থাতেও অ্যালকোহলের অভ্যাস ছাড়তে পারছেন না। কিন্তু এক্ষেত্রে গর্ভের শিশুর ক্ষেত্রে রয়েছে বেশ কিছুটা ঝুঁকি।

    কারণ মা যা খায়, গর্ভের সন্তান তাই পায়। অতএব, এই নয় মাসে গর্ভবতী মহিলার খাদ্যাভ্যাসের দিকে বিশেষ মনোযোগ দেওয়া উচিত। 'অ্যালকোহল ক্লিনিক্যাল অ্যান্ড এক্সপেরিমেন্টাল রিসার্চ' জার্নালের রিপোর্ট বলছে, গর্ভবতী মহিলারা যদি কম থেকে মাঝারি অ্যালকোহলও খেয়ে থাকেন তাহলে গর্ভে থাকা শিশুর প্রসবপূর্ব বিকাশে পরিবর্তন আসতে পারে।

    গর্ভাবস্থায় অ্যালকোহল পান করা মায়ের শরীরের মধ্যে বেড়ে ওঠা অনাগত শিশুর জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক হতে পারে। কারণ এই অ্যালকোহল প্ল্যাসেন্টার মাধ্যমে শিশুর কাছে পৌঁছে গিয়ে বিকাশমান শরীরের ক্ষতি করতে পারে। কারণ সেই শিশুর মধ্যে ততক্ষণে মায়ের মত অ্যালকোহল প্রক্রিয়া করার ক্ষমতা আসে না। এ প্রসঙ্গে, নতুন গবেষণার প্রধান গবেষক ডঃ এলেনা বাখিরেভা বলেছেন যে মহিলারা গর্ভাবস্থায় অল্প পরিমাণেও অ্যালকোহল পান করলে বাচ্চাদের জন্মের সময় ওজন এবং দৈর্ঘ্য কম হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। বিশেষত মেয়ে সন্তানদের মধ্যে এর প্রবণতা বেশি থাকে। এমনকি এটি শিশুদের জন্মগত অস্বাভাবিকতার ঝুঁকিও নাকি বেশ বাড়িয়ে তুলতে পারে।

    কয়েকদিন আগে শিকাগোতে অনুষ্ঠিত একটি সম্মেলনে এই সমীক্ষা চালানো হয়েছিল। সেখানে ২০ হাজারেরও বেশি ৪৮ বছর বয়সী প্রাপ্তবয়স্কদের থেকে তথ্য নিয়ে এই গবেষণা চালানো হয়েছিল। গর্ভাবস্থায় অ্যালকোহল পান সম্পর্কে তথ্য নেওয়া হয়েছিল। এরপে জন্মের সময় তাঁদের সন্তানদের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত তথ্যও সংগ্রহ করা হয়েছিল। এই সবটা ভালো করে পর্যবেক্ষণ করেই গবেষকরা দেখেছেন যে গর্ভাবস্থায় মায়ের মদ্য পান বিশেষ করে প্রিটার্ম ডেলিভারি এবং বৃদ্ধির সীমাবদ্ধতা, সেই সঙ্গে নিউরোডেভেলপমেন্টাল ফলাফলের দিকেও নিয়ে যায়।

    এলেনা বাখিরেভা এও বলেছেন যে বেশির ভাগ অংশগ্রহণকারীরা গর্ভবতী হওয়ার পরে তাঁদের মদ্যপান যথেষ্ট পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছিলেন বা পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছিলেন, তাতেও সেভাবে লাভ হয়নি। অ্যালকোহল হ্রাস করার সত্ত্বেও, পুরুষ এবং মহিলা উভয় শিশুর মধ্যে কিছু ঘাটতি দেখা গিয়েছিল। তাই গবেষক পরামর্শ দিয়েছেন যে যতটা সম্ভব অ্যালকোহল পান কমিয়ে আনতে আরও গবেষণা প্রয়োজন। এমনকি গর্ভবতী মহিলাদের গর্ভাবস্থায় অ্যালকোহল পানের পরবর্তী বিপদ সম্পর্কে ডাক্তারদের সঙ্গে খোলামেলাভাবে কথা বলা উচিত।

    এছাড়াও, যদি একজন গর্ভবতী মহিলা অ্যালকোহল (অ্যালকোহল এবং গর্ভাবস্থা) পান করা বন্ধ না করেন তবে শিশুর ভ্রূণ অ্যালকোহল সিন্ড্রোম হওয়ার একটি উচ্চ সম্ভাবনা থেকে। একে ডাক্তারি পরিভাষায় FASDও বলা হয়। এতে শিশুর মনে মারাত্মক প্রভাব পড়ে। যা ঠিক করা যায় না। এক রোগকে অ্যালকোহল স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডারও বলা হয়। এছাড়াও এটি স্বাস্থ্যের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে, যেমন ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ বা গর্ভাবস্থার অন্যান্য জটিলতা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেতে পারে। এরই পাশাপাশি প্রয়োজনীয় ওষুধ এবং ভিটামিনও গর্ভাবস্থায় কম কার্যকর হতে পারে।
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)