• চা-চক্রের আগে বন্ধ সব দোকান, অভিযোগের তির তৃণমূলের দিকে
    আনন্দবাজার | ২৩ এপ্রিল ২০২৪
  • প্রাতর্ভ্রমণের পরে রোজই জনবহুল জায়গায় চা-চক্র করেন বর্ধমান-দুর্গাপুরের বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ। স্থানীয় দোকান থেকে চা কেনা হয়। কিন্তু সোমবার সকালে বর্ধমান-কাটোয়া রাজ্য সড়কের দেওয়ানদিঘি মোড়ে তাঁর কর্মসূচিতে ‘বাধা’ পড়ে। আশপাশের সব ক’টি চায়ের দোকান খোলা ছিল না। যদিও অন্য সব দোকানই খুলে গিয়েছিল। বিজেপির অভিযোগ, রবিবার রাতে কর্মসূচি ঠিক হওয়ার পরে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা এসে ব্যবসায়ীদের সকালে দোকান খুলতে নিষেধ করে দেয়। সেই ‘ভয়ে’ চায়ের দোকানগুলি খোলার সাহস পাননি ব্যবসায়ীরা। যদিও অন্য দিনের মতোই দেওয়ানদিঘির মোড়ে চেয়ার-টেবিল সাজিয়ে চা খেয়েছেন বিজেপি প্রার্থী। দোকানের দুধ-চা নয়, এক কর্মীর বাড়ি থেকে আনা চিনি ছাড়া লিকার চা পান করেন তিনি। দলীয় কর্মীদের তাঁর বার্তা, “ভোটের পর দলীয় অফিসেই (তৃণমূল) তালা মেরে দিও। ঝামেলা মিটে যাবে। ওই একটা দোকান বন্ধ করলেই হবে, বাকি সব চলবে। বলে রেখো, ঝান্ডাটাও পাল্টে দেব।”

    বিষয়টি নিয়ে দু’রকম প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন বর্ধমান ১ ব্লকের তৃণমূল যুব সভাপতি মানস ভট্টাচার্য ও বিধায়ক (বর্ধমান উত্তর) নিশীথ মালিক। মানস বলেন, “তৃণমূলের আমলে চায়ের দোকানদাররা গোষ্ঠী-ঋণ, অসংগঠিত-ঋণ নিয়ে ব্যবসা করছেন। বাড়িতে লক্ষ্মীর ভান্ডার, স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের সুবিধা পাচ্ছেন। তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর ভক্ত। নিজেরাই নারী বিদ্বেষী বিজেপি প্রার্থীকে চা খাওয়াবেন না বলে ক্ষতি মেনে নিয়েও দোকান খোলেননি। এর সঙ্গে তৃণমূলের সম্পর্ক নেই।” বিধায়কের দাবি, “বিজেপি প্রার্থী মিথ্যা কথা বলে সংবাদের শিরোনামে আসতে চাইছেন।”

    দিলীপের অভিযোগ, “দেওয়ানদিঘির মোড়ে আমাদের চা-চক্র হওয়ার কথা ছিল। তার আগে রাত থেকে তৃণমূলের গুন্ডারা সব চায়ের দোকান বন্ধ করার হুমকি দিয়েছে। এই মোড়ে সকালবেলা প্রচুর মানুষ চা খেতে আসেন। হুমকির জন্য সব বন্ধ।” তাঁর ক্ষোভ, ‘‘চা না খেলে কি আমরা কাজ করতে পারব না? মানুষকে কেন কষ্ট দিচ্ছেন? এই রাজনীতি আর কত দিন চলবে?’’ বিজেপির স্থানীয় নেতৃত্বের দাবি, এ দিন প্রাতর্ভ্রমণে স্থানীয় লোকজন কারা ছিলেন, তা ‘নজরে’ রাখতে তৃণমূলের কয়েক জনকে মাঠের চারপাশে ঘুরতে দেখা যায়।

    বর্ধমান-কাটোয়া রেল লাইনের ধারে মাঠে প্রাতর্ভ্রমণের সময়েই বিষয়টি কানে যায় দিলীপের। তিনি বলেন, “যত এ সব করবে, তোমাদের তত লাভ হবে। যেখানে যা ইচ্ছা করুক. লোকের উপর অত্যাচার করুক, তবেই লোক ওদের বিরুদ্ধে (তৃণমূল) খেপবে।” তৃণমূল বিধায়কের যদিও দাবি, ‘‘হতাশা থেকেই হুমকি-হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন প্রার্থী।”

    দেওয়ানদিঘি মোড়ের কাছে দু’জন দোকানদার দাঁড়িয়েছিলেন। দোকান খুললেন না কেন? নাম প্রকাশে এক জন আকাশের দিকে তাকিয়ে বললেন, “সবই কর্তার ইচ্ছা।”
  • Link to this news (আনন্দবাজার)