আলু-মুরগির দামে ছেঁকা, মধ্যবিত্তের সাধ্যের বাইরে মাংসের ঝোলও
বর্তমান | ১৯ এপ্রিল ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: গত কয়েক সপ্তাহ ধরে লাফিয়ে বাড়ছে মুরগির মাংসের দাম। চাহিদার তুলনায় জোগান কম বলেই দাম চড়ছে, বক্তব্য বিক্রেতাদের। এমনিতে পাঁঠার মাংসের দাম আকাশ ছোঁয়া। ফলে মুরগি আর আলু দিয়ে ঝোল বানিয়ে মাংস খাওয়ার সাধ মেটায় বাঙালি। পুষ্টিও মেলে। এখন এমন পোড়া কপাল যে, মধ্যবিত্তের অন্যতম শখের খাবার মুরগির মাংসও হয়ে উঠছে বহুমূল্য। ফলে দাম শুনে না কিনে পিছিয়ে আসতে হচ্ছে বহু নিম্নবিত্ত-মধ্যবিত্তকে। এর পাশাপাশি মূল্যবৃদ্ধির কোপে পড়েছে বাঙালির অপরিহার্য খাবার আলুও।
কলকাতা ও তার আশপাশের বাজারগুলিতে ২৪০ থেকে ২৬০ টাকা দাম এক কেজি কাটা মুরগির। যা ক’দিন আগেও ছিল ১৭০ থেকে ১৯০ টাকা। আর আলুর দাম ৩০ টাকা ছুঁয়ে ফেলেছে। কোথাও কোথাও দাম আরও বেশি নিচ্ছেন বিক্রেতারা।
জানা গিয়েছে, হাতিবাগান, মানিকতলা বাজারে ২৪০ থেকে ২৫০ টাকা কিলো দরে বিক্রি হচ্ছে মুরগি। নিউ মার্কেটে দাম কিলো প্রতি ২৬০ টাকা। শ্রীমন্ত ঘোষ নামে পাটুলি বাজারের এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘১৮০ টাকার মুরগি কিছু দিনের মধ্যেই ৩০০ টাকায় পৌঁছবে বলে মনে হচ্ছে।’ বাজারে ঢুকে মুরগির দাম শুনেই হকচকিয়ে যাচ্ছে মানুষ। হাতিবাগান বাজারে কৈবল্য মজুমদার নামে এক ক্রেতা জিজ্ঞেস করলেন, ‘কমবে কবে?’ বিক্রেতা নিরুত্তর। কৈবল্যবাবু বলেন, ‘আলু দিয়ে মুরগির ঝোল একটু খাব তার জো নেই।’ বাঙালির রান্না আলু ছাড়া ভাবাই যায় না। এদিকে আলুর দামও ছ্যাঁকা দিচ্ছে। পাইকপাড়ার বাসিন্দা দিপালি রায় বাজারে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘এই গরমে আলু ভাতে বা ঝুরঝুরে করে আলু ভাজা, ডাল ভাতের সঙ্গে খেতে ভালো লাগে। কিন্তু যা দাম! আলু খাওয়াও কমাতে হবে।’
শহরে খোলা বাজারে জ্যোতি আলু ২২ থেকে ২৪ টাকা কিলো। চন্দ্রমুখীর দাম ২৮ থেকে ৩০ টাকা। কোথাও তা আরও বেশি। বিক্রেতাদের বক্তব্য, গতবছর এই সময় ১৫ থেকে ১৬ টাকা কিলো ছিল জ্যোতি। এ বছর তা এক লাফে আট টাকা বেড়ে গিয়েছে। রাজ্য সরকারের টাস্ক ফোর্সের সদস্য কমল দে বলেন, ‘বৃষ্টি এবার ডুবিয়ে দিয়েছে। ফলন ভালো হয়নি। জমির তলাতে অনেক আলু পচে গিয়েছে।’
তথ্যভিজ্ঞ মহলের বক্তব্য, অন্যান্য বছর এক কোটি ২০ লক্ষ মেট্রিক টনের মতো আলু উৎপাদন হয়। এবার ৮০ লক্ষ মেট্রিক টনের মতো উৎপাদন হয়েছে। স্টোর হয়েছে মাত্র ৬৩ মেট্রিক টন। চাহিদার তুলনায় উৎপাদন কম। তার মধ্যে ভোট চলছে। এই পরিস্থিতিতে সরকারও আলুর দাম নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। কমলবাবুও বলেন, ‘ভোট চলছে। সরকারের পক্ষে দাম নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। নির্বাচনী বিধি উঠলে সরকার পদক্ষেপ করবে।’