• ইভিএমে কারচুপি! পদ্মে অতিরিক্ত ভোট নিয়ে সুপ্রিম হুঁশিয়ারি
    বর্তমান | ১৯ এপ্রিল ২০২৪
  • নয়াদিল্লি: এ যেন ম্যাজিক! ইভিএমে বোতাম টিপলে বাড়তি ভোট চলে যাচ্ছে বিজেপির ঝুলিতে। ভিভিপ্যাট স্লিপের গুনতি যা দেখাচ্ছে, তার সঙ্গে মিলছে না ভোটযন্ত্রের ফল। তাতেই আবারও উস্কে গেল কারচুপির অভিযোগ! কেরলের কাসারগোড়ে ইভিএম পরীক্ষার সময় ইভিএমে এই ‘ভূত’ প্রকাশ্যে এসেছে বলে দাবি সেরাজ্যের এক সংবাদমাধ্যমের। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে ইভিএম-ভিভিপ্যাট মামলার শুনানিতে সেকথা উল্লেখ করেন অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রাইট-এর আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ। তার প্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশনকে মৌখিক হুঁশিয়ারি দিল শীর্ষ আদালত—এই অভিযোগ দ্রুত খতিয়ে দেখুন। 

    আজ, শুক্রবার লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফার ভোটগ্রহণ। তার ঠিক ২৪ ঘণ্টা আগেই ইভিএম কারচুপির এই অভিযোগ ঘিরে ব্যাপক শোরগোল পড়ে গিয়েছে। এবার প্রথম থেকেই ভোটযন্ত্র নিয়ে দুশ্চিন্তার মেঘ ঘনিয়েছে বিরোধীদের মধ্যে। তাদের সাফ দাবি, ‘আব কি বার, ৪০০ পার’-এর জন্য ইভিএমই ‘ভরসা’ মোদি সরকারের। যদিও সেকথা সরাসরি অস্বীকার করেছে সরকার তথা নির্বাচন কমিশন। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে যে, সাম্প্রতিককালে ইভিএম নিয়ে তথ্য জানার অধিকার (আরটিআই) আইনে করা প্রশ্নের উত্তর দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ করা হয়েছে। তার জন্য কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশনের তোপের মুখেও পড়েছে নির্বাচন কমিশন। এই পরিস্থিতিতেই এদিন কেরলের ওই সংবাদমাধ্যমের দাবি, পরীক্ষার সময় অন্তত চারটি ইভিএমে বিজেপির খাতায় বাড়তি ভোট পড়ার ঘটনা ধরা পড়েছে। তা নিয়ে কাসারগোড়ের জেলাশাসকের কাছে অভিযোগ জানিয়েছে বাম (এলডিএফ) ও কংগ্রেস (ইউডিএফ) জোট। আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ ওই রিপোর্টের উল্লেখ করার পরই উদ্বেগ প্রকাশ করে সুপ্রিম কোর্ট। নির্বাচন কমিশনকে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বলা হয়। পরে কমিশন ওই রিপোর্ট ভুয়ো বলে দাবি করলেও শীর্ষ আদালতের অবস্থান বিন্দুমাত্র নরম হয়নি। বরং দ্ব্যর্থহীন ভাষায় জানিয়ে দেয়, নির্বাচনী প্রক্রিয়ার ‘পবিত্রতা’ বজায় রাখতেই হবে। অবাধ ও স্বচ্ছ নির্বাচন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এদিন ভোটগ্রহণের প্রতিটি ধাপের প্রক্রিয়া নিয়ে কমিশনের ব্যাখ্যাও চায় শীর্ষ আদালত। বিচারপতি সঞ্জীব খান্না ও দীপঙ্কর দত্তের বেঞ্চ বলে, অপ্রত্যাশিত কিছু হচ্ছে বলে যেন কারও মনে যেন কোনও আশঙ্কা না থাকে। 

    ইভিএমে প্রদত্ত ভোট ও ভিভিপ্যাটে পেপার স্লিপের গুনতি ১০০ শতাংশ মিলছে কি না, তা খতিয়ে দেখার একঝাঁক আবেদন পেশ হয়েছে। এদিন সেই সংক্রান্ত শুনানি চলাকালীন এক আবেদনকারীর আইনজীবী নিজাম পাশা বলেন, ‘ভিভিপ্যাট স্লিপ ভোটারের হাতে আসা উচিত। ভোট দেওয়ার পর তিনি তা ব্যালট বাক্সে ফেলবেন।’ যদিও এতে ভোটের গোপনীয়তা ভঙ্গ হতে পারে বলে মত নির্বাচন কমিশনের। পাশাপাশি সব ভিভিপ্যাট পেপার স্লিপ গোনার জন্য যন্ত্র ব্যবহার করা যায় কি না, আদালত সেই প্রশ্নও করে। কমিশন জবাবে বলে, এই পেপার স্লিপগুলি খুবই পাতলা। এগুলি গণনার লক্ষ্যে তৈরি হয় না। এরপরই আদালত কড়া ভাষায় বলে, আপনারা যা বলছেন আর জনসমক্ষে যা রয়েছে, তার মধ্যে সামঞ্জস্যের অভাব রয়েছে বলে মনে হচ্ছে। কমিশনের আধিকারিক বলেন, আমাদের লুকানোর কিছুই নেই। যদিও তাতে সুপ্রিম কোর্ট বিন্দুমাত্র সুর নরম না করে বলে, ভোটারের আস্থা রক্ষা করতেই হবে। এদিন মামলার রায়দান স্থগিত রাখে সুপ্রিম কোর্ট।
  • Link to this news (বর্তমান)