• চব্বিশের মহারণের আজ প্রথম দফা: উত্তরবঙ্গে গড় রক্ষাই চ্যালেঞ্জ বিজেপির
    বর্তমান | ১৯ এপ্রিল ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশে আজ, শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে ‘গণতন্ত্রের উৎসব’। প্রথম দফায় পশ্চিমবঙ্গের তিন কেন্দ্র (কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি) সহ দেশের ২১টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ১০২টি লোকসভা আসনে ভোট হবে। দেশজুড়ে মোট ১৬২৫ জন প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারণ হবে এদিন। এর মধ্যে রয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক, নীতিন গাদকারি, ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লবকুমার দেব সহ বহু ‘হেভিওয়েট’। 

    উত্তরবঙ্গের যে তিনটি আসনে আজ ভোট হচ্ছে, গত লোকসভায় তার সবক’টি বিজেপি জিতেছিল। সেই হিসেবে উত্তরবঙ্গের এই অংশকে ‘বিজেপির গড়’ বললে অত্যুক্তি হয় না। এবারের নির্বাচনে সেই গড় রক্ষাই চ্যালেঞ্জ বিজেপির। চ্যালেঞ্জ কারণ, গত লোকসভার আগে যে প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি ছুটিয়েছিল গেরুয়া শিবির, তার সিংহভাগই অধরা থেকে গিয়েছে। পদ্ম-পার্টির এই ‘ব্যর্থতা’ রাজ্যের শাসক দলের ‘তুরুপের তাস’। সেই সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের একগুচ্ছ জনমুখী প্রকল্পও তাদের বড় হাতিয়ার।  হারানো জমি পুনরুদ্ধারে বদ্ধপরিকর তৃণমূল। তাই ভোটের মুখে প্রায় ১৩ দিন উত্তরবঙ্গের এই তিন জেলায় জনসংযোগ চালিয়েছেন স্বয়ং মমতা। 

    নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, আজ রাজ্যের এই তিন জেলার ৫৬ লক্ষ ২৬ হাজার ১০৮ জন ভোটার তাঁদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করবেন। এঁদের মধ্যে মহিলা ২৭ লক্ষ ৬৩ হাজার ৫০৬। পুরুষ ২৮ লক্ষ ৬২ হাজার ৪৯৪ এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ১০৮ জন। বৃহপতিবার সকাল থেকে জেলার ডিস্ট্রিবিউশন অ্যান্ড রিসিভিং সেন্টারগুলিতে (ডিসিআরসি) ছিল ভোটকর্মীদের চূড়ান্ত ব্যাস্ততা। প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সংগ্রহ করে এদিনই তাঁরা বুথে পৌঁছে গিয়েছেন। মোট ৫৮১৪টি বুথের মধ্যে ‘স্পর্শকাতর’ ৮৩৭টি। তবে প্রত্যেক বুথেই থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনী।  মোট ২৬৩ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। সেই সঙ্গে ওয়েব কাস্টিংয়ের মাধ্যমেও নজরদারি চালাবে নির্বাচন কমিশন। ইতিমধ্যে বৃহস্পতিবার রাতে কোচবিহারে তৃণমূল অভিযোগ করেছে,কেন্দ্রীয় বাহিনী প্রিসাইডিং অফিসারদের একটি ফর্মে স্বাক্ষর করাচ্ছে। তাতে লেখা আছে, অবৈধ জমায়েত হলে অস্ত্র ব্যবহার করা যাবে। এই নিয়ে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। 

    ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গে বিজেপির জয়জয়কার হয়েছিল। এই তিন কেন্দ্র জিতে নেয় তারা। ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কিছু জায়গা পুনরুদ্ধার করে। বিজেপিও হাত গুটিয়ে বসে ছিল না। এই আবহে এবার মমতা জানিয়ে দিয়েছেন, দিল্লিতে সরকার গড়বে ইন্ডিয়া জোট, যার নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকায় থাকবে তৃণমূল। সেক্ষেত্রে বাংলায় তিনি যত বেশি আসন পাবেন, ততই তাঁর হাত শক্ত হবে। তাই উত্তরবঙ্গের এই তিন আসন দখলে মরিয়া ঘাসফুল শিবির। তবে এক ইঞ্চি জমি ছাড়তে রাজি নয় বিজেপি। শেষ পর্যন্ত লড়াই চলবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন কোচবিহারের বিজেপি জেলা সভাপতি সুকুমার রায়।
  • Link to this news (বর্তমান)