• নতুন ধাঁচে উচ্চ মাধ্যমিক: ৫ শতাংশ কম নম্বরেও পাশ, একসঙ্গে দুই সেমেস্টারের পরীক্ষা সাপ্লিমেন্টারি হিসেবে
    বর্তমান | ১৯ এপ্রিল ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে যেমন প্রতি সেমেস্টারে বাধ্যতামূলক পাশের নিয়ম চালু হচ্ছে, তেমনই বেশকিছু ছাড়ের ঘোষণাও করল উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সংসদ সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য জানান, সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষার পাশাপাশি পাশমার্কেও থাকছে ছাড়। এছাড়া, একটি বিষয়ে ফেল করলে সেটিকে অপশনাল বিষয় হিসেবে পরিবর্তনের সুযোগ আগের মতোই থাকছে। দ্বাদশের চূড়ান্ত সেমেস্টারে একাধিক বিষয়ে অকৃতকার্য হলে সেই বিষয়গুলিতেই পরের বছর পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হলে চলবে। তবে, উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, নিয়মের ফাঁক গলে দু’টি সেমেস্টারের পরীক্ষা একবারে দেওয়ার সুযোগও থাকছে ছাত্রছাত্রীদের। মধ্যবর্তী কোনও সেমেস্টারে কোনও পরীক্ষা না দিয়ে চূড়ান্ত সেমেস্টারে সবগুলি দিতে পারবে তারা। তবে, সেক্ষেত্রে তাদের মার্কশিটে সাপ্লিমেন্টারির নির্দেশক হিসেবে ‘এস’ শব্দটি উল্লেখ থাকতে পারে।

    ধাপে ধাপে নিয়মগুলি জেনে নেওয়া যাক। অপশনাল-সহ ছ’টি বিষয় রয়েছে উচ্চ মাধ্যমিকে। তার মধ্যে প্রতি সেমেস্টারে পাঁচটি বিষয়ে পাশ (ন্যূনতম ৩০ শতাংশ) করলেই উত্তীর্ণ বলে গণ্য হবে কোনও পরীক্ষার্থী। ফেল করা বিষয়টি ঐচ্ছিক হয়ে যাবে। তবে, দু’টি ভাষাপত্রে পাশ করতেই হবে একজন পড়ুয়াকে। কোনও পড়ুয়া যদি ৫ শতাংশ পর্যন্ত কম নম্বর পেয়ে একটি আবশ্যিক বিষয়ে অকৃতকার্য হয়, তাহলে অন্য একটি আবশ্যিক বিষয় থেকে সেই নম্বর বিয়োগ হয়ে প্রথমটিতে যোগ করে তাকে উত্তীর্ণ ঘোষণা করা হবে। অকৃতকার্য কোনও প্রার্থীর ক্ষেত্রে যদি প্রাপ্ত নম্বর এবং পাশমার্কের মধ্যে ৫ শতাংশের বেশি ফারাক থাকে, তাহলে সেটি ইলেকটিভ বিষয় হয়ে যাবে। আর পাশ করা কোনও বিষয় হয়ে যাবে কম্পালসারি সাবজেক্ট। তবে কোনও পরীক্ষার্থী দু’টির মধ্যে একটি নিয়মে সুযোগ পাবে। কোনও প্রার্থী যদি মনে করে, যে-বিষয়ে সে ফেল করেছে, সেটিকে কম্পালসারিই রাখতে চায়, তাহলে তাকে মার্কশিট সারেন্ডার করে ফের পরীক্ষা দিতে হবে।

    একাদশে প্রথম সেমেস্টারে একাধিক বিষয়ে ফেল করলে দ্বিতীয় সেমেস্টারে তা সাপ্লিমেন্টারি হিসেবে পাশ করার সুযোগ থাকছে। তবে, দ্বিতীয় সেমেস্টারের কোনও বিষয়ে অনুত্তীর্ণ হলে বা প্রথম সেমেস্টারের কোনও বিষয়ে সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষায় অসফল হলে কেঁচে গণ্ডূষ করতে হবে তাকে। অর্থাৎ পরের বছর তাকে ফের প্রথম সেমেস্টার থেকে সবক’টি বিষয়ের পরীক্ষা দিতে হবে। দ্বাদশের ক্ষেত্রেও সাপ্লিমেন্টারির সুযোগ থাকছে। তবে দ্বিতীয় সেমেস্টারে অনুত্তীর্ণ হলে পরের বছর তাকে সেই বিষয়গুলির পরীক্ষাই দিতে হবে। প্রথম সেমেস্টার থেকে সব পরীক্ষা তাকে দিতে হবে না। ফলে সিসি বা স্পেশাল ক্যান্ডিডেটের ব্যবস্থা এবার থেকে উঠে যাচ্ছে।

    একাদশের পরীক্ষা নেবে স্কুল। শুধুমাত্র সংসদের নির্দেশ অনুযায়ী তা নিতে হবে এবং তাদের ওয়েব পোর্টালে সেই মার্কস আপলোড করতে হবে। দ্বাদশের দু’টি পরীক্ষাই নেবে সংসদ। তবে, শিক্ষকদের একাংশের প্রশ্ন, একাদশ এবং দ্বাদশে কোর্সটিকে সংসদ যেখানে চারটি সেমেস্টারে ভাগ করেছে, সেখানে প্রথম এবং দ্বিতীয় সেমেস্টারকে তৃতীয় এবং চতুর্থ সেমেস্টর থেকে পৃথক করে কেন রাখা হল? পরীক্ষা এবং মূল্যায়ন পদ্ধতিই-বা কেন আলাদা করা হল, সেই প্রশ্ন তুলছেন তাঁরা।
  • Link to this news (বর্তমান)