• আলুওয়ালিয়ার কর্মিসভায় তুমুল অশান্তি, ধাক্কাধাক্কি
    বর্তমান | ১৯ এপ্রিল ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, আসানসোল: ফের প্রকাশ্যে বিজেপির গোষ্ঠীকোন্দল। বারবানি বিধানসভা এলাকার কর্মী সম্মেলন রণক্ষেত্রের চেহারা নিল। বারাবনি থানার অদূরে বড়বাথান এলাকায় একটি বেসরকারি অনুষ্ঠান ভবনে মিটিং ডাকা হয়। বৃহস্পতিবার সেখানে প্রার্থী ঢুকতেই এক গোষ্ঠী অপর গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেয়। চেয়ার ছোড়াছুড়ির পাশাপাশি টেবিলের উপর উঠে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন দলীয় কর্মীদের একাংশ। ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয় বিজেপি ১ নম্বর মণ্ডল সম্পাদক উত্তম কর্মকারকে। গেরুয়া কাপড়ে মুখ ঢেকে বিজেপির একাংশ তখন ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীকে সবক শেখাতে ব্যস্ত। পরে প্রার্থীর ছেলে ও দলের শীর্ষ নেতাদের মধ্যস্থতায় কোনও রকমে পরিস্থিতি শান্ত হয়। দলের এই কোন্দলের ছবি ক্যামেরা বন্দি করার সময়ে সংবাদ মাধ্যমের উপর চড়াও হয় বিজেপি কর্মীদের একাংশ। সাংবাদিককে মারধর করা হয় ও ক্যামেরা ছুড়ে ফেলা হয়। এ নিয়ে অবশ্য ক্ষমা চান বিজেপি প্রার্থী। 

    একদা দক্ষিণবঙ্গে বিজেপির উত্থান ভূমি আসানসোলে যে গেরুয়া শিবিরের সংগঠনিক শক্তি তলানিতে ঠেকেছে তা শীর্ষ নেতৃত্বর অজানা নয়। দুর্বল সংগঠন, তাঁর উপর গোষ্ঠীকোন্দল। এই কোন্দলের আঁচ প্রার্থী পেয়েছিলেন কুলটিতে তাঁর প্রথম রোড শোয়েই। সেখানে দলের এক নেতা বিজেপি বিধায়কের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ এনেছিলেন। তাঁকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে প্রার্থীর নিরাপত্তারক্ষীর বিরুদ্ধে। জেলার সহ সভাপতির বিরুদ্ধেই থানায় লিখিত অভিযোগ করে বিক্ষুব্ধ নেতা জিশান কুরেশি। এদিন যেন ক্ষোভ নয়, বিস্ফোরণের আঁচ পেলেন প্রার্থী। জানা গিয়েছে, বারাবনিতে বিজেপি কার্যত দু’টি গোষ্ঠীতে ভেঙে গিয়েছে। ২০১৪ ও ২০১৯ সালে তৎকালীন বিজেপি প্রার্থীকে দলের যে অংশ ভালো ভোটে লিড দিয়েছিল তাঁদের অনেককেই নাকি বর্তমানে বিজেপির ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী গুরুত্ব দিচ্ছে না বলে অভিযোগ। এমনকী ২০২১ সালে বারাবনি বিধানসভা আসনে বিজেপি প্রার্থী অরিজিৎ রায়কেও জেলা সংগঠনের কোনও দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। উল্টে জেলায় সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়ে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন বারাবনিরই এক নেতা। এই অবস্থায় যে অংশ দলের গুরুত্ব পাচ্ছেন না তাঁরা মিটিংয়ে ডাক না পেয়েও চলে আসেন। প্রার্থী আসতেই শুরু হয় তুমুল বিক্ষোভ। মহিলা বিজেপি কর্মীদেরও রাস্তার উপরে ক্ষোভ উগরে দিতে দেখা যায়।  

    পরবর্তীকালে সবাইকে নিয়ে বৈঠক শুরু হয়। বৈঠক শেষে সুরেন্দ্র সিং আলুওয়ালিয়া সাফাই দিয়ে বলেন, কোনও বিক্ষোভ হয়নি। লোকের উৎসাহ বেশি। যত লোককে ডাকা হয়েছিল তার থেকে বেশি লোক চলে এসেছিল। চেয়ার থেকে লোক বেশি ছিল তাই চেয়ার কাড়াকাড়ি হয়েছে। চারটে বাসন একসঙ্গে থাকলে খটখট আওয়াজ হয়। তা নিয়ে অশান্তি মনে করবেন না। যখন চেয়ার কাড়াকাড়ি হচ্ছিল তখন আপনারা ঢুকে গিয়েছিলেন। আপনারা তো একটা সেনসেশনাল নিউজ বানানোর চেষ্টা করছিলেন সে জন্য ধাক্কা পড়েছে। তার জন্য আমি বিজেপির হয়ে ক্ষমা চাইছি। 

    বারাবনির বিধায়ক বিধান উপাধ্যায় বলেন, বিজেপি নিজেদের পরাজয় দেখতে পাচ্ছে। তাই বিভিন্ন ভাবে এলাকায় ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা করছে। তাঁদের বাড়িতে বোমা ফাটছে, গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের খবর করতে গেলে সাংবাদিকদের মারছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা করছি।   নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)