• সংখ্যালঘুদের নিয়ে সুর নরম দিলীপের!
    বর্তমান | ১৯ এপ্রিল ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: ভোট বড় বালাই। সংখ্যালঘুদের নিয়ে সুর নরম করলেন বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ। তাঁর গলায় সেই হুঁশিয়ারির সুর উধাও। বিধানসভা নির্বাচনের আগে তিনি এবং বিজেপির প্রথম সারির অনেক নেতাই অন্য ভূমিকা নিয়েছিলেন। তার ফল যে ভালো হয়নি তা বিজেপি নেতৃত্ব হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছিল। ভোটপ্রচারে বেরিয়ে দিলীপবাবু বলেন, মুসলিমদের ধন্যবাদ জানাব। রামনবমী পালনে তাঁরা সহযোগিতা করেছেন। কিছু দুষ্কৃতী এনে গণ্ডগোল পাকানোর চেষ্টা হয়েছিল, তা হয়নি। সংখ্যালঘুরা বিশ্বাসঘাতকতার শিকার হয়েছে। জেলের মধ্যে ৯৫ শতাংশ মুসলিম ক্রিমিনাল কেসে রয়েছেন। ওদের সঙ্গে ধোঁকাবাজি করা হয়েছে। মুসলিমরা তৃণমূলকে আর ভোট দেবে না।

    এক তৃণমূল নেতা বলেন, উনি তো আগে মুসলিমদের দেশছাড়া করার হুমকি দিয়েছিলেন। এখন এসব বলে আর কী লাভ হবে। আমরা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির রাজনীতিতে বিশ্বাস করি। বিজেপি তা করে না, সেটা বারে বারে প্রমাণিত হয়েছে।

     বিজেপির সূত্রে জানা গিয়েছে, বিধানসভা নির্বাচন থেকে নেতৃত্ব শিক্ষা নিয়েছে। সংখ্যালঘুরা তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল। বহু মুসলিম বুথে তারা খাতাই খুলতে পারেনি। সেকারণে বিজেপি একশোর গণ্ডি পেরতে পারেনি।  লোকসভা নির্বাচনে তা হলে দলের টার্গেট পূরণ হবে না সেটা নেতৃত্ব ভালোই বোঝে। তাই তারা অন্য পথে হাঁটার কৌশল নিয়েছে বলে রাজনৈতিক মহল মনে করছে।  সংখ্যালঘুদের মন জয় করতে সাংসদ সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়া  বিভিন্ন কবরস্থানের পরিকাঠামো উন্নয়নে অর্থ বরাদ্দ করেছেন। বিভিন্ন গ্রামে পথবাতি বসিয়েছেন। দিলীপবাবুর গলায় এখন আর সেই আক্রমণাত্মক সুর  শোনা যাচ্ছে না। প্রচারে নেমে তিনি  সংখ্যালঘুদের একবারের জন্যও আক্রমণ করেননি। তাঁর মুখে সংখ্যালঘুদের নিয়ে প্রশংসা শুনে অনেকেই অবাক হয়েছেন। 

     তবে বৃহস্পতিবার প্রচারে বেরিয়ে দিলীপবাবু তৃণমূলকে এক হাত নিয়েছেন। তিনি বলেন, ঘুষের রাজত্ব চলছে। কোনও উন্নয়নমূলক কাজ হচ্ছে না। এসব করে লাভ হবে না। তৃণমূল ইস্তাহারে যা বলেছে তা কোনওদিনই পূরণ করতে পারবে না। দিল্লিতে সরকার গঠন করার জন্য যে সংখ্যা দরকার তাদের সব শরিকদলের নেই।  দিলীপবাবু বলেন, তৃণমূল কেন্দ্রের সব প্রকল্পের বিরোধিতা করেছিল। নোটবন্দি বা ৩৭০ ধারার বিরোধিতা করেও কিছু করতে পারেনি। দর্শক হয়ে ছিল, দর্শক হয়েই থাকবে। মিথ্যা প্রতিশ্রুতিতে লাভ হবে না। কেন্দ্র রেশনে চাল দেয়। রাজ্য এক কেজিও চাল দিতে পারেনি। এদিন দিলীপবাবুর জন্মদিন ছিল। এক কর্মী পেন উপহার দিতে এলে বলেন, আমার হাতে লাঠি ভালো লাগে, পেন নয়। এগুলো সব ইঞ্জিনিয়ারদের হাতে থাকে। 

    এদিন ভাতারে ভোটপ্রচার করেন তৃণমূল প্রার্থী কীর্তি আজাদ। তিনি দিলীপবাবুকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার বাংলার কোটি কোটি টাকা আটকে রেখেছে। দিলীপবাবু আবাস যোজনা, ১০০দিনের কাজের টাকা আনার জন্য কী করেছেন জানতে চাই। বাংলার মানুষ শান্তি চায়। লাঠি হাতে ঘোরা নিয়েও কটাক্ষ করেন কীর্তি।
  • Link to this news (বর্তমান)